মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে কচ্ছপ উদ্ধার, অবমুক্ত

জাতীয়

মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সময় একটি গ্রামের মাঝে এক মাছ বিক্রেতার মাছ বিক্রি দেখতে থামেন ওয়াল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার কাজল হাজরা। মাছ বিক্রেতার কাছে মাছের সাথে একটি কচ্ছপ এর বাচ্চা দেখতে পেয়ে মাছ বিক্রেতাকে অনেক বুঝানোর পরও যখন প্রাণীটি উদ্ধার করতে পারছিলেন না তখন পকেটের ১০০ টাকা দিয়ে প্রাণীটি কিনে নিলেন তিনি। পরে বন বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে গতকাল সোমবার (২৬ জুন) প্রাণীটি অবমুক্ত করেন তিনি। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের রামনগর এলাকা থেকে গত শুক্রবার প্রাণীটি উদ্ধার করেন কাজল হাজরা।

কাজল হাজরা একজন ওয়াল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার পাশাপাশি বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করা সংগঠনগুলোর সাথে তাকে প্রায়ই বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যেতে দেখা যায়। অনেক বার শিকারিদের হাত থেকে প্রাণীদের বাঁচাতে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে বন্যপ্রাণী কিনে অবমুক্ত করতে দেখা গেছে তাকে। সর্বশেষ গত ২৪ মে কাজল হাজরার প্রচেষ্টায় দুটি ডাহুক পাখির বাচ্চা শিকারির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলো।

কাজল হাজরা বলেন, গত শুক্রবার উপজেলার রামনগর এলাকায় এক মাছ বিক্রেতার মাছের সাথে কচ্ছপের বাচ্চাটি দেখতে পাই। মাছ বিক্রেতাকে প্রাণিটি কেন এনেছেন জিজ্ঞেস করলে বলে অনেকে নাকি সখ করে এই কচ্ছপের বাচ্চা বাসায় রাখে তাই বিক্রির জন্য এনেছেন। পরে আমি মাছ বিক্রেতাকে বুঝিয়ে বলি যে এটি একটি বন্যপ্রাণী। এটা ধরা ও বিক্রি করা অপরাধ। দিন দিন এগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এগুলো আমাদের সবাইকে মিলে রক্ষা করতে হবে। পরে মাছ বিক্রেতাকে ১০০ টাকা দিয়ে প্রাণীটি আমার কাছে নেই। এবং বন বিভাগকে জানাই এবং স্থানীয় একজনের বাসায় প্রাণীটি রাখি। আজ বন বিভাগের পরামর্শে প্রাণীটি অবমুক্ত করি। এই প্রাণীটি লেকের পানিতে নামার সাথে সাথে পানির নিচে ডুব দিয়ে সাতার কাটছিল। দেখতে অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতিকে বাঁচাতে সবাইকে লড়াই করতে হবে।

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, কচ্ছপের বাচ্চাটি কাজল হাজরা মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে উদ্ধার করে আমাকে জানায়। পরে আজ সোমবার বিকেলে প্রাণীটিকে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া স্টুডেন্ট ডরমেটরি লেকে অবমুক্ত করা হয়েছে। কাজল হাজরা এর আগেও কয়েকবার বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে বন বিভাগের মাধ্যমে অবমুক্ত করেছে। আমাদের বন্যপ্রাণী রক্ষায় সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। আপনার আশেপাশে কোন বন্যপ্রাণী আহত হলে বা লোকালয়ে চলে আসলে তাকে হত্যা বা তাড়া  না করে বন বিভাগকে জানালে আমরা প্রাণীটি উদ্ধার করবো।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *