মাধবপুর উপজেলায় চা শ্রমিকদের অনুদানের টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে একটি পক্ষের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এমন তথ্য জানাজানি হওয়ার পর থেকে সুরমা চা বাগানের শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানা যায়।
শ্রমিকদের একাংশের ভাষ্য, তাদের এই টাকায় প্রভাবশালী বিভিন্ন মহলের চোখ পড়েছে। এর পর থেকেই তারা এ নিয়ে নানা অস্বস্তি ও জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে।
সুরমা চা বাগানের শ্রমিক নেতা প্রদীপ কৈরি জানান, সম্প্রতি এই চা বাগানের ২ হাজার ২০০ শ্রমিককে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে এককালীন অনুদানের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। শ্রমিকদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে সে টাকা ছাড় দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যসহ একটি চক্র অত্যন্ত কৌশলে সহজ-সরল শ্রমিকদের ভুলভাল বুঝিয়ে টাকা উত্তোলনের পর তাদের কাছ থেকে এর একাংশ রেখে দিচ্ছে। বিষয়টি সাধারণ চা শ্রমিকদের মধ্যে জানাজানির পর অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
বাগানের শ্রমিক নেতা অবিরত বাক্তি জানান, শাহজাহানপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফুল মিয়াসহ স্থানীয় তিনজন ইউপি সদস্য চা শ্রমিকদের অনুদানের টাকা তোলায় সহায়তার নামে সঙ্গে করে নির্ধারিত ব্যাংকে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখান থেকে টাকা তোলার পর বিভিন্ন খরচের নামে শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা রেখে দিচ্ছেন।
এ ক্ষেত্রে যেন কোনো অনিয়ম না হয়, সেজন্য শ্রমিক নেতারা একসঙ্গে সবার টাকা তুলে বণ্টন করে দিতে চেয়েছিলেন। সরকারের নিয়ম অনুসারে সেটি করা সম্ভব নয়।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য ফুল মিয়া জানান, সরকারি অনুদানের টাকা শ্রমিকদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বণ্টন করা হয়েছে। সেখানে তারা উপস্থিত হয়ে টাকা তুলছে। কোনো ইউপি সদস্য এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেননি বা কারও কাছ থেকে কোনো টাকাও নেননি। শ্রমিক নেতারা সব টাকা তুলে পরে বণ্টন করতে চাচ্ছেন।সেখানে দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে।এতে শ্রমিকরা ঠকবে।
এ বিষয়ে সুরমা চা বাগানের উপকারভোগী শ্রমিক এলি পান তাতীর বক্তব্য, ‘সরকার সুন্দরভাবে আমাদের টাকা দিচ্ছে।এই টাকা নিয়ে ইউপি সদস্য ও কিছু শ্রমিক নেতার মধ্যে বিরোধ চলছে। ব্যাংক থেকে টাকা নিতে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। শ্রমিকদের এই টাকায় অনেকেরই লোভ রয়েছে। সহজ-সরল শ্রমিকদের কেউ কেউ তাদের ফাঁদে পড়তেও পারেন। সেজন্য সচেতন থাকা দরকার।’
মাধবপুর উপজেলার সমাজসেবা কর্মকর্তা আলী আশরাফ জানান, চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন সংক্রান্ত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা বাগানের ওই ২ হাজার ২০০ শ্রমিককে অনুদান দেওয়া হয়। হিসাবধারী চা শ্রমিকরা নিজে উপস্থিত হয়ে তাদের নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে সে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। চা শ্রমিকদের ঠকিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে কোনো প্রতারণার অপচেষ্টা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শেয়ার করুন