‘মানবিক’ পুলিশ হিসেবে পরিচিত মো.শওকত হোসেনের চাকরিচ্যুতির বিষয় নিয়ে দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে শওকতের বিরুদ্ধে নেওয়া বিভাগীয় ব্যবস্থার সঙ্গে তার অতীত কর্মকাণ্ড সম্পৃক্ত করে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধ জানায় সিএমপি।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দিনগত রাত ১২টা ৩২ মিনিটে সিএমপির অফিসিয়াল ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এই পোস্ট দেওয়া হয়।
পোস্টে লেখা হয়-
‘চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) সাবেক কনস্টেবল মো. শওকত হোসেনকে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদ থেকে বরখাস্ত করার বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। প্রচার মাধ্যমে তার অতীতের কার্যক্রমের বিষয়ে আলোকপাত করা হলেও কী কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে সে বিষয়টি উপেক্ষা করা হয়েছে।’
‘তিনি গত ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্মস্থলে (বন্দর বিভাগ, সিএমপি) ইচ্ছাকৃতভাবে গরহাজির (অনুপস্থিত) থাকেন। কোনো যৌক্তিক কারণ এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে গরহাজির থাকা যেকোনো শৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য গর্হিত অপরাধ, যা চূড়ান্ত অসদাচরণ হিসেবে গণ্য।’
এতে আরও বলা হয়, ‘শওকত হোসেনকে ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সদরদপ্তরের আদেশে চট্টগ্রাম রেঞ্জে বদলি করা হয়। চট্টগ্রাম রেঞ্জ অফিস থেকে ২০২২ সালের ১৩ মার্চ কুমিল্লা জেলায় বদলি করা হলে তিনি কুমিল্লায় যোগদান করেননি এবং রহস্যজনকভাবে গরহাজির থাকেন। তার গরহাজির সম্পর্কে কোনো তথ্য কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রেরণ করেননি। পরে চলতি বছরের ১ মার্চ অর্থাৎ ৩৫৩ দিন পরে কুমিল্লা জেলায় যোগদান করেন।’
‘বস্তুত তিনি ৪২৪ দিন কর্মস্থল থেকে গরহাজির থাকেন। কুমিল্লা জেলায় গরহাজির থাকায় তাকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। তিনি কুমিল্লা জেলায় গরহাজির হওয়ার প্রতিবেদনে অসুস্থতাজনিত কারণে হাজির না হওয়ার কথা বললেও কোনো চিকিৎসা সনদ উপস্থাপন করতে পারেননি। তবে তিনি চাকরিতে গরহাজির থাকলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবসময়ই হাজির ছিলেন এবং তাকে কোনো সময়ই শারীরিকভাবে অসুস্থ মনে হয়নি।’
ফেসবুক পোস্টে সিএমপি আরও উল্লেখ করে, ‘যিনি এক বছরের বেশি সময় কর্মস্থলে গরহাজির থাকেন, তিনি পুলিশের মতো একটি শৃঙ্খলা বাহিনীতে সংযুক্ত থাকতে পারেন না বলেই প্রতীয়মান হয়। এই ধরনের অপেশাদার, শৃঙ্খলা বহির্ভূত কার্যক্রমের পরেও তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে তা প্রশাসনিকভাবে খারাপ নজির হিসেবেই গণ্য হতো।’
‘তাছাড়া তিনি নিজেই অভিযোগের ব্যাপারে আত্মসমর্থনমূলক বক্তব্যে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে অভিহিত করেন। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং মানবিক কাজে সম্পৃক্ত থাকার কারণে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেন।’
এ অবস্থায় কনস্টেবল শওকতের বিরুদ্ধে নেওয়া বিভাগীয় ব্যবস্থার সঙ্গে তার অতীত কর্মকাণ্ড সম্পৃক্ত করে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানিয়েছে সিএমপি।
শেয়ার করুন