মানুষ চলাচল না করলেও ওয়াকওয়েতে জ্বলছে বাঁতি,সিটির উদাসীনতা

সিলেট

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সারাদেশে যখন সরকার নিয়েছে নানা পদক্ষেপ তখন সিলেটে প্রশাসনের উদাসীনতায় দেখা যাচ্ছে ভিন্ন। বিদ্যুত সাশ্রয়ের জন্য বারবার তাগিদ দেয়া হচ্ছে ঠিক সেই সময়টায় সিলেটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নির্দেশনা না মেনেই দোকানপাট খোলা রাখছেন ব্যবসায়ীরা।

আবার দিন দুপুরে সড়কের পাশে জ্বলতে দেখা যায় এলইডি বা ডিজিটাল বোর্ড। রাতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলােতে দেখা যাচ্ছে জ্বলছে একাধিক বাতি।যেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ঘোষণা কেবল কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ।

গত ১৯ জুলাই থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও রাত ৮ টার পর দোকানপাট, মার্কেট ও শপিং মল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। এর ধারবাহিকতায় ওইদিন রাতে নির্দেশনা বাস্তবায়নে ৩ ম্যাজিস্ট্রেটকে সাথে নিয়ে সিলেট নগরের বিভিন্ন শপিং মল, মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো.মজিবর রহমান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন,বিদ্যুতের যেহেতু ক্রাইসিস চলছে। সেহেতু বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সবার সহযোগীতা প্রয়োজান। সোমবার (২৫ জুলাই) বিকাল পৌণে চারটায় দেখা যায়, দিনের আলোয় জ্বলছে এলইডি কিংবা ডিজিটাল বোর্ড। নগরের নাগরি চত্বরের পাশেই রয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রাধীন বিশাল ডিজিটাল বোর্ড। বিভিন্ন কোম্পানির বিজ্ঞাপন ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে প্রচারিত করা হচ্ছে।একই চিত্র দেখা যায় নগরের বন্দরবাজার কামরান চত্বরের পাশে থাকা আরেকটা ডিজিটাল বিলবোর্ডেও।

সিলেট সার্কিট হাউসে গিয়ে দেখা যায়, চারপাশের দেয়ালসহ অর্ধশতাধিক বাতি জ্বলছে।একেকটি বাতির দূরত্ব হবে ৮-১০ ফুট।এছাড়াও সার্কিট হাউসের সামনে গার্ডেনে ছোট ছোট বাতি জ্বলতে দেখা যায়। বিভিন্ন উপজেলাগুলোর বাজারে অনেক দোকানকোটা খোলা থাকতে দেখা যায়। যেখানে চাহিদার বাহিরেও একাধিক বাতি জ্বলতে দেখা যায়।বিভিন্ন স্থানে বিপনী বিতান, রেষ্টেুরেন্ট, ফার্মেসির সামনে জ্বলছে এলইডি বোর্ড।

এছাড়াও কমিউনিটি সেন্টারেও আলোকসজ্জা করে বিয়ের অনুষ্ঠান, পেট্রোল পাম্প ও গ্যাসের ফিলিং স্টেশন,অভিযাত হোটেল মোটেলগুলোতেও প্রয়োজনের চাইতে বেশি বাতি ব্যবহার করা হচ্ছে।

এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন নগরীর  উপশহরের ওয়াকওয়ে গুলো এখনও উদ্ধোধন না হলেও জ্বলছে বাতি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) রুহুল আলম বলেন, ডিজিটাল বিল বোর্ড আমাদের নিয়ন্ত্রাধীন হলেও মূলত তা পরিচালনা করেন অন্যরা।ব্যবসায়ীক কারণে বিলবোর্ডগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত অফিসিয়াল কোনো নির্দেশনা আসেনি বিদ্যুত সাশ্রয়ের জন্য তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে হবে বা কত ঘন্টা জ্বলতে পারবে। তবে সামাজিকভাবে এ বিষয়টি আমরা চিন্তা করবো। প্রয়োজন হলে নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এব্যাপারে দক্ষিণ সুরমার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত লায়লা নীরা বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদেরকে এলাকায় জনসচেতনতার জন্য বলা হয়েছে।যদি তা মানা না হয় তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান বলেন,সোমবার আমাদের কোনো অভিযান ছিল না। আগামীকাল থেকে আবারো অভিযান শুরু হবে। প্রথম দিনে আমাদের তিনটি টিম অভিযান পরিচালনা করলেও পরবর্তীতে দুটি টিম মহানগরীতে অভিযান পরিচালনা করছে।

তিনি আরও বলেন,আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের মাঝে জনসচেতনতা তৈরি করা। তবে কেউ তা অমান্য করলে আমরা ব্যবস্থা নেব। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সবার সহযোগীতা প্রয়োজন।

এব্যাপারে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল কাদির গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, সোমবার বিকাল ৫টায় সিলেট নগরীতে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ২১৯ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া গেছে মাত্র ১১৫ মেগাওয়াট।এখন আমাদের ক্রাইসিস মোমেন্ট চলছে।এই অবস্থায় থেকে বের হতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

এলইডি ও ডিজিটাল বিলবোর্ড জ্বলানোর ব্যাপারে তিনি বলেন,এগুলো অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে।যেহেতু আমাদের চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম।তাই সেগুলো সাশ্রয় করা প্রয়োজন।তাছাড়া এরকম একটি বিল বোর্ডের বিদ্যুৎ সাশ্রয় হলে ছোট একটি পরিবার বা দোকানপাটে বিদ্যুৎ দেয়া সম্ভব বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *