মাশরাফিকে নিয়ে ভারতীয় ওয়েবসাইটে অসত্য প্রতিবেদন

খেলাধুলা

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মোর্ত্তজাকে ‘শীর্ষ ধনী’ ক্রিকেটার উল্লেখ করে অপপ্রচারের পর সেই প্রতিবেদন মুছে দিয়েছে ভারতের ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকার। প্রতিবেদন মুছে দিলেও এনিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন কীভাবে রাতারাতি এত ধনী হলেন মাশরাফি।

তবে এই প্রতিবেদনকে উদ্ভট বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য মাশরাফি। তিনি উদ্ভট এই প্রতিবেদনের সূত্রে বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম এনিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।

ক্রিকট্র্যাকার প্রতিবেদনে জানায় মাশরাফির সম্পদের পরিমাণ ৫০ মিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৫১০ কোটি টাকা। মাশরাফির পরে ৪০৭ কোটি টাকা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছেন সাকিব আল হাসান। এই তালিকায় একে একে আছে মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, রুবেল হোসেন ও মমিনুল হকের নাম।

এই তালিকার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে মাশরাফি মোর্ত্তজাকে নিয়ে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন পোস্টে দাবি করা হয়েছে মাত্র ৪ বছরের ব্যবধানে ৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা থেকে ৫১০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন মাশরাফি।

‘টপ টেন রিচেস্ট বাংলাদেশ ক্রিকেটার্স’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি ২৩ অক্টোবর প্রকাশ করেছিল ক্রিকট্র্যাকার। অনুমাননির্ভর তথ্য ও কিছু অখ্যাত ওয়েবসাইটকে উদ্ধৃত করে এই তালিকা সাজিয়েছিলেন নিবন্ধের লেখক তেজস রাঠি। মাশরাফির সম্পদের তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়নি নির্দিষ্ট কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা চার্টাড অ্যাকাউন্ট্যান্টের কোনো বক্তব্য বা তথ্য।

ক্রিকট্র্যাকার ক্রিকেটের স্কোর, সংবাদ ও প্রতিবেদনভিত্তিক একটি ভারতীয় সাইট যেটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সৈয়দ সাজ্জাদ পাশা। ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা সাইটটি ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে পরিচালিত হচ্ছে। ক্রিকট্র্যাকার নিজেদের কন্টেন্ট প্রকাশের পাশাপাশি সাইটটি ভক্তদের কিছু লেখাও ছাপায়। এমনই একটি লেখা ছিল তেজস রাঠির কথিত নিবন্ধ। পরে এটি সরিয়ে নেয় ক্রিকট্র্যাকার কর্তৃপক্ষ।

ক্রিকট্র্যাকারের ক্রিকেট অ্যাপিল নামে একটি বিভাগ রয়েছে, যেখানে ফ্রিল্যান্স লেখক ও ভক্তদের লেখা প্রকাশ করা হয়। ফ্রিল্যান্স ক্রিকেট লেখক তেজস রাঠির আলোচিত প্রতিবেদনটি ক্রিকেট অ্যাপিল বিভাগেই প্রকাশিত হয়েছিল। তেজস রাঠির লিংকডইন প্রোফাইলে দেখা গেছে, তিনি দুটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষানবিশ পদে কর্মরত আছেন ও ক্রীড়া বিষয়ক সাইট স্পোর্টসকিড়ায় খণ্ডকালীন জুনিয়র এডিটর। এছাড়া ওয়ান ক্রিকেট ও স্পোর্টস টাইগার নামের সাইটগুলোতে তিনি লেখেন বলে উল্লেখ করা আছে।

এদিকে, কথিত শীর্ষ ধনী ক্রিকেটারের তালিকা নিয়ে সোমবার মধ্যরাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মাশরাফি মোর্ত্তজা। তিনি লেখেন, ‘ভিনদেশী কোনো হাবিজাবি স্বস্তা ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ তাদের মনগড়া যা ইচ্ছা লিখতেই পারে। সেসবকে পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাদেরকে সূত্র ধরে নিয়ে যখন আমাদের দেশের নানা ওয়েবসাইট যা ইচ্ছা তাই লিখে দেয়, তখন দুঃখ লাগে বটে !

‘দেশের একজন মানুষকে নিয়ে লেখা হচ্ছে, আপনারা চাইলেই তো খোঁজ-খবর নিতে পারেন। তা না করে উল্টো তাদের উদ্ভট নিউজের সূত্র ধরে আপনারা নিউজ করছেন। সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার ন্যূনতম চর্চা নাহয় করলেন না, অন্তত নিজেদের এতটা স্বস্তা হিসেবে তুলে ধরতেও তো বিবেকে নাড়া দেওয়া উচিত…!’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *