যশোর জেলার অভয়নগর -মনিরামপুর-কেশবপুর-ফুলতলা-ডুমুরিয়া উপজেলার অংশ বিশেষের ৯৬ টি হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম নিয়ে গঠিত ৯৬ গ্রামের প্রাণ কেন্দ্র মশিয়াহাটীতে ( একটি প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উদ্বোধন করা হয় মশিয়াহাটী আঞ্চলিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলক।উদ্ধোধিত তালিকায় ৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা দেওয়া হয়েছে।যে তালিকা মৃত ও বিদেশে অবস্থানরত বাদ দিলে সরকারের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের গেজেটভুক্ত ৭জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
এ বিষয়ে মশিয়াহাটী এলাকার সাধারণ জনগণ ও কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলে জানা যায় বর্তমানে ভারতের নাগরিক সুকৃতি রঞ্জন বিশ্বাস যিনি নাম ফলক তৈরিসহ সার্বিক দায়িত্ব পালন করেছেন তার মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে গেজেটভুক্ত নয় তিনি
নাম ফলকটি তৈরি করতে গিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এবং এলাকার সাধারণ জনগণের ভিতর এক ধরনের চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকার বয়ঃবৃদ্ধ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কিছু বিপথগামী লোক যারা স্বাধীনতা পরবর্তীতে নানারকম রাষ্ট্রবিরোধী কাজের সাথে নিজেরা জড়িত ছিল এবং সাধারণ জনগণকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জড়িত করেছিল তারাই মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি করে আবারও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং সম্মূখ সারির অনেক মুক্তিযোদ্ধা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী তাদের নাম ফলক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তেমনি ২ জন
ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অভয়নগর উপজেলার মুজিববাহিনীর সম্মুখ সমরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্রী প্রভাষ চন্দ্র রায়, পিতা- মৃতঃ প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, গ্রাম- লখাইডাঙ্গা, পোঃ মশিয়াহাটী, জেলাঃ যশোর ও বিষ্ণুপদ গাইন, পিতা: উপেন্দ্রনাথ গাইন, গ্রাম: লখাইডাঙ্গাসহ আরও যাদের নাম মশিয়াহাটী আঞ্চলিক মুক্তিযোদ্ধার নাম ফলকে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রভাষ চন্দ্র রায়ের ভাইপো অনিমেশ রায় বলেন, আমার কাকা প্রভাষ চন্দ্র রায় ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে অভয়নগর উপজেলার মুজিববাহিনীর সম্মুখ সমরের যুদ্ধ করলে তার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়নি এবং যখন তালিকা করা হয় তখন আমাদের সাথে যোগাযোগ করা হয়নি।
এ বিষয়ে কথা হয় তালা মুক্তিযোদ্ধা কলেজের শিক্ষক চঞ্চল রায়ের সাথে, তিনি বলেন,আঞ্চলিক বীর মুক্তিযুদ্ধাদের নামফলক করা হবে বলে দ্রুত একটি অভ্যন্তরীণ প্রচার-প্রচারনা চালানো হয়। বিশেষ করে যারা গেজেটে নেই তাদের একটু বেশি হাক ডাকা মনে হচ্ছে। মৃত ও বিদেশে অবস্থানরতদের বাদ দিলে যে কয়েকজন গেজেটভূক্ত মুক্তিযোদ্ধা আছেন ৫/৬ জন।
উল্লেখ্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (কামুকা) আইন২০২২ এর ০৬ ধারা অনুযায়ী,মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠন নিবন্ধীকরণ ও সাময়িকভাবে স্থগিতকরণ থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এ ধরনের কাজ করে সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখানোই এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
শেয়ার করুন