মুম্বাইয়ে ঝড়ে বিলবোর্ডর নিচে চাপা পড়ে ৮ জন নিহত, আহত ৫৯

বিশ্ব

ভারতের মুম্বাইয়ের ঘাটকোপারে শক্তিশালী ধূলিঝড়ে বিশাল বিলবোর্ডের নিচে চাপা পড়ে ৮ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন ৫৯ জন। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৬৭ জনকে বলেও মুম্বাই পুলিশ জানায়।

সোমবার (১৩ মে) এ দুর্ঘটনার খবর জানায় দেশটির গণমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ হঠাৎই আকাশ কালো করে জোরালো ঝড় ওঠে মুম্বাইয়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুরু হয় ধূলিঝড়। সেই ঝড়ের ধাক্কায় ঘাটকোপড় এলাকায় উপড়ে যায় একটি বিশাল আকারের ধাতব বিজ্ঞাপন বোর্ড। ভেঙে পড়া সেই বিলবোর্ডের নিচে চাপা পড়েন অনেকেই।

এ ঘটনার বেশ কিছু ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। সেগুলোতে দেখা গেছে যে বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ডটি ভেঙে পড়ছে একটি পেট্রোল পাম্পের উপর; যার আঘাতে দুমড়ে গিয়ে নীচে নেমে আসে পেট্রোলপাম্পের ছাদ। চাপা পড়ে পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু গাড়িও। বিলবোর্ডের ধাতব কাঠামো বহু গাড়ির ছাদ ফুঁড়ে ঢুকে যায়। আয়তনের হিসাব করে পুলিশ তখনই জানিয়েছিল, বিলবোর্ডের নীচে অনেকে চাপা পড়ে থাকতে পারে।

ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শী স্বপ্নিল খুপ্তে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, “ধূলিঝড়ে বিলবোর্ডটি যখন পড়ছিল তখন আমি সেখানে ছিলাম। সেই স্থানটিতে আগে থেকেই গাড়ি, বাইক এবং লোকজনের সমাগম। ফলে বিলবোর্ডটি পড়ার পর সেগুলো সব আটকে যায়। আমরা আটকা পড়া মানুষদেরকে উদ্ধারে চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু কোনভাবেই তাদেরকে বের করতে পারিনি।”

পুলিশ জানিয়েছে, ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছে। ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে থাকা জীবিতদের উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে বলেছেন, মানুষকে উদ্ধার করাই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। যারা আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসার দায়িত্ব সরকার নেবে। আর যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারকে ৫ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে।

এছাড়াও মুম্বাইতে এমন বিলবোর্ড পরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নাভিস এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছেন, এ ঘটনা কীভাবে হলো তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

সোমবার বিকেলে এই ঝড় ওঠার কিছুক্ষণ আগেই মহারাষ্ট্রের আবহাওয়া দফতর সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। আবহাওয়ায় বড় ধরনের কোনও পরিবর্তন হতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল মুম্বই,পালঘর এবং থানের বাসিন্দাদের। তার পরেই কয়েক মিনিটের ওই ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় মুম্বাই শহর।

ফলে থমকে যায় শহরের সমস্ত যান চলাচল। ঝড়ে মুম্বই শহরের বহু গাছ, বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে যায়। থমকে যায় রেল এবং মেট্রো পরিষেবাও। এর মধ্যেই ঝড়ের প্রাবল্যে ঘাটকোপড়ের ওই বিলবোর্ডটিও ভেঙে পড়ে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *