মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিলেন সিসিকের ৪ বারের কাউন্সিলর আজাদ

সিলেট

সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে নির্বাচনের লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং সিসিকের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের টানা ৪ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বিকেল ৩ টায় রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি।

এ সময় কাউন্সিলর আজাদ বলেন, আমি সিলেট নগরীরই সন্তান। আমার বাবা, দাদার জন্ম এখানেই। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্ব থেকে আমার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে দেশের সকল রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে আমার পূর্বসূরিরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে কারাবন্দী হন আমার চাচা এডভোকেট শফিকুর রহমান। তিনি ২৩ মাস কারাবন্দী ছিলেন। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে দেয়াল লিখনের অপরাধে স্কুল জীবনেই কারাবরণ করতে হয় আমাকে। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনের আমলে আমার পরিবারের উপর নেমে আসে অত্যাচার ও নিপীড়নের খড়্গ। আমাকে না পেয়ে আমার সহজ সরল প্রবাসী বড় ভাইকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় পুলিশ। শুধুমাত্র আমার ভাই হওয়ার কারণে বিনা অপরাধে দীর্ঘদিন কারাবন্দী ছিলেন তিনি। নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারিনি, পালিয়ে বেড়িয়েছি। গরুর ঘরেও লুকিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছি। বিনা অপরাধে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ বুকে লালন করার কারণে পরিণত হয়েছিলাম তৎকালীন বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের পেটোয়া বাহিনীর টার্গেটে। হামলাও হয়েছে বহুবার। কিন্তু আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি এক মুহুর্তের জন্যও। পালিয়ে যাইনি দেশ ছেড়ে। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পাই। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজো বয়ে বেড়াচ্ছি।

তিনি বলেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ ও পরে সিলেটের যুবলীগকে সংগঠিত করেছি। তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে। যুবলীগের দায়িত্ব যখন কেউ নিতে চাইছিলো না, ঠিক তখনই আমি সিলেট জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হই। সিলেট অঞ্চলে ঝিমিয়ে পড়া যুবলীগে সঞ্চার করি নতুন প্রাণের। পরবর্তীতে সিসিক গঠনের পর মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হই। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, পরে শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এবং সর্বশেষ, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মহানগরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করেন।

তিনি আরো বলেন, রাজনীতির পাশাপাশি আমার পরিবার ৪ দশক ধরে সিলেটে জনপ্রতিনিত্ব করে আসছে। আমার বড় ভাই আজিজুর রহমান মানিক সিলেট সদর উপজেলার অবিভক্ত টুলটিকর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এই ইউনিয়নটি ভেঙে বর্তমানে সিসিকের ১২টি ওয়ার্ড বানানো হয়েছে। আমার আরেক ভাই আমৃত্যু সিলেট পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার ছিলেন। আমি সিসিকের জন্মলগ্ন থেকে অদ্যাবধি টানা ৪ বার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। ২০১৮ সালের সিসিক নির্বাচনে আমি নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্তে প্রয়াত সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সে সময় আমি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নৌকার পক্ষে জন্য কাজ করি। এবারেও আমি মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যদি আমাকে সুযোগ দেন, তাহলে আমি সিসিক নির্বাচনে নৌকার নিরঙ্কুশ বিজয় উপহার দিয়ে যানজটমুক্ত, ক্লিন ও স্মার্ট সিলেট সিটি গড়ে তুলব ইনশাআল্লাহ।

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিকলীগের বিপুল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিবর্গ, প্রবাসী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *