যশোরে দুর্গাপূজায় বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগে প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

জাতীয়

স্বীকৃতি বিশ্বাস স্টাফ রিপোর্টারঃ

আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) সোমবার দুপুরে যশোর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের বিরুদ্ধে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার হাজিরহাট মন্দিরে পূজা উদযাপনে বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগ করেন মণিরামপুর উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী ও হাজিরহাট মন্দির ও সর্বজনীন দুর্গা পূজা পরিচালনা কমিটির সভাপতি রীতা রানী পাড়ে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পূজা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমিয় কান্তি রায়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, পূজা উদযাপন কমিটি গঠন নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলমাল করে তারা এখন রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা করছে। পূজা পরিচালনা কমিটি গঠনে সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। পূজা কে বা কারা কীভাবে উদযাপন করবে তা পূজা উদযাপন পরিষদ ও কমিটির ব্যাপার। এতে আমার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রীতা রাণী পাড়ে বলেন – মণিরামপুর উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত হাজিরহাট বাজারে প্রতি বছর জাঁকজমকপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হয়।

গত ২৬ জুলাই এলাকার ছয়টি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষের উপস্থিতিতে দুর্গা পূজা পরিচালনা কমিটি গঠন করতে সভার আয়োজন করা হয়। ঐ সভায় পূর্ববর্তী কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। উপস্থিত মানুষের মধ্যে ৮০ শতাংশের সমর্থনে রীতা রাণী পড়েকে সভাপতি ও অমিয় রায়কে সাধারণ সম্পাদক এবং অশান্ত মল্লিককে কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে বাইরের গ্রাম থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের ও পূর্ববর্তী কমিটির হাতে গোনা কয়েকজন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক ও পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে হামলা করে কমিটি গঠনের সভা বাধাগ্রস্ত করা হয়। রীতা রানী বলেন- গত কয়েক বছরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরা এই কমিটি গঠনের মিটিংয়ে উপস্থিত থেকে বর্তমান কমিটিকে সমর্থন করেন। কিন্তু প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের সমর্থক ও ক্যাডার হিসেবে পরিচিতদের সহায়তায় জেলা ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সহায়তায় নানা ষড়যন্ত্র করছেন যাতে আমাদের পূজা পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটে।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন- গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিকালে প্রতিমন্ত্রীর মদদে শতাধিক পুলিশ এবং প্রতিমন্ত্রীর ক্যাডার খ্যাত স্থানীয় চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন অবস্থান নেয়। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের মতামত উপেক্ষা করে শুধুমাত্র প্রতিমন্ত্রীর ইচ্ছা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখেন। রাত দশটার দিকে একজন সহকারী পুলিশ সুপার ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হন। এরপর হঠাৎ পুলিশ লাঠিপেটা করে পূজা কমিটির লোকজনকে বের করে দেন। হরিদাসকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বিপদ ভঞ্জন পাড়েকে জিম্মি করে তার ( বিপদ ভঞ্জন পাড়ের স্ত্রী রীতা রাণী পাড়ের) কাছ থেকে মন্দির ও পূজা পরিচালনায় ব্যবহৃত অফিস কক্ষের চাবি ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) বেলাল হোসেন বলেন, পূজা উদযাপন কমিটির দুই পক্ষই সেদিন হাজিরহাট বাজারে অবস্থান নেয়। উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। আমরা শুধু আইন শৃঙ্খলা ঠিক রাখার চেষ্টা করেছি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *