স্বীকৃতি বিশ্বাস, স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঋতু পরিক্রমায় বর্ষার বাদল ধারা আর কদম- কেয়ার সৌন্দর্য্যকে বিদায় জানিয়ে শুরু হয়েছে সৌন্দর্য মন্ডিত শরৎ কাল। সুশোভিত শিউলি, শাপলা, শালুক, পদ্ম, কাশফুল আর শুভ্র সাদা মেঘের ভেলা,শরতের বিমোহিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রূপের মহিমার অপরূপ সাজে সজ্জ্বিত হয়ে আবর্তিত হয় বাঙালির হাজার বছরের শারদীয় দুর্গোৎসব।
এ বছর যশোরে উৎসবমুখর পরিবেশে ৭২৩টি মন্দির-মন্ডপে এবং সারাদেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি পূজামন্ডপে সাড়ম্বরে উদযাপিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। মন্ডপগুলোতে নিরাপত্তার স্বার্থে একাধিক সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যশোরে সদর উপজেলায় ১৫০টি, শার্শায় ২৯টি, ঝিকরগাছায় ৫৭টি, মণিরামপুরে ১০৫টি, কেশবপুরে ৯৬টি, চৌগাছায় ৪৯টি, বাঘারপাড়ায় ৯৭টি, অভয়নগরে ১৩০টি মন্দিরে এবার দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
দিনের শুরুতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রী শ্রী চন্ডিপাঠের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকে আগমনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে । স্থাপন করা হয়েছে ঘট, করা হয়েছে বিশেষ পূজা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ আজ পঞ্চমী তিথি।
আগামীকাল শনিবার ১ অক্টোবর ২০২২ পড়েছে মহাষষ্ঠী। ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পূজার আনুষ্ঠানিকতা।
রবিবার ২ অক্টোবর ২০২২ পড়েছে সপ্তমী তিথি। সোমবার ৩ অক্টোবর ২০২২ পড়েছে অষ্টমী তিথি। মঙ্গলবার ৪ অক্টোবর ২০২২ পড়েছে নবমী তিথি।বুধবার ৫ অক্টোবর ২০২২ পড়েছে দশমী তিথি।বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে বহু কাঙ্খিত দূর্গোৎসব।
যশোরের ৭২৩ টি পূজামন্ডপে আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাওয়া শারদীয় দুর্গা পূজার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। হাতে গোনা দুই-একটি স্থানে আলোকসজ্জা ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ বাকি রয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (ক্রাইম এন্ড অপস্) হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করে কেউ পার পাবে না। শঙ্কামুক্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশেই উদযাপিত হবে দুর্গোৎসব। দুর্গোৎসব নির্বঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য যশোরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ মহড়াও অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শারদীয় দুর্গাপূজাকে শঙ্কামুক্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এরই মধ্যে মাঠে নেমে পড়েছে। আয়োজক কমিটির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন আইন -প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।
যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপঙ্কর দাস রতন বলেন, যশোরে ৭২৩টি পূজামন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, জেলায় প্রায় দেড়শ মন্দিরে বিভিন্ন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার রেকর্ড রয়েছে। এসব মন্দিরগুলোকে অতিগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় প্রশাসনের কাছে তালিকা দেয়া হয়েছে।
এদিকে জেলার ৩ উপজেলায় এখনো সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা হয়নি প্রসঙ্গে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (ক্রাইম এন্ড অপস্) বলেন, পুজো শুরুর আগে যেকোনো উপায়ে সব মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। দুর্গোৎসবকে নির্বিঘ্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে থাকবে। তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র পূজাকে ঘিরে নয়, যশোরে সাম্প্রদায়িক-সম্প্রতি রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় তৎপর রয়েছে।
এবছর দেবী দূর্গার আগমন গজে এবং ফিরে যাবেন নৌকায়। মায়ের গজে আগমনের ফলশ্রুতি হচ্ছে শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা। আর নৌকায় গমনের ফলশ্রুতি শস্যবৃদ্ধি এবং জলবৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে।
শেয়ার করুন