যা লিখা আছে শিপার ‘সুইসাইড নোটে’

সিলেট

সিলেট নগরীর সুবিদবাজার এলাকার এক কিশোরীর মরদেহে পাশ থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা ১৩ বছর বয়সী ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার সুবিদবাজারের নুরানী আবাসিক এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, জান্নাত আরা শিপা নামের ওই কিশোরী নুরানী আবাসিক এলাকার ৫১/১০নং বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতো। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘর থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেশিরা তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিয়েছিলেন।

ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ‘সুইসাইড নোট’ উদ্ধার করে।

এ তথ্য জানিয়ে নগরীর বিমানবন্দর থানার ওসি খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির বলেন, শিপার হাতের লেখার সঙ্গে সুইসাইড নোটের লেখা মিলে গেছে। এখন নোটটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

সুইসাইড নোটের একেবারে ওপরের দিকে ইংরেজিতে লেখা আছে, ‘আই লাভ ইউ মাই ফ্যামেলি’।

এরপর শিপা কিছুটা সিলেটি আর কিছুটা প্রমিত বাংলায় নিজের কথাগুলো লিখেছে।

তার সুইসাইড নোটে লিখা আছে (পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে বানান কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে)-

“আমি কারো কারণে মরছি না, আমি আমার নিজের কারণে মরছি। তোমরা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিও, তোমরা ভালো থাকো। আমার জন্য কেউ খুশি করতে পারছো না, আমি মরে গেলে সবাই শান্তি থাকবে। আমি তোমাদের পথের কাঁটা হয়েছি, আমি মরে গেলে তোমাদের আর কেউ মারবে না, ছিল্লাবে না। আমি মানুষ ভালো নয়। তোমরা সবাই আমাকে অনেক মায়া করেছো। খুব বেশি আশা ছিল আম্মাকে দেখার, আর তো দেখা হবে না। আমি মরে গেলে তোমাদের কাউকে পড়ানো লাগবে না, আমার কারণে তোমাদের কেউ শান্তি পাচ্ছো না। আমি তোমাদের কাউকে হাসতে দিচ্ছি না, তোমাদের সবার হাসিখুশি আমি কেড়ে নিয়েছি। আমি মরে গেলে তোমরা মনখুলে হেসো, শান্তিতে থেকো। তোমরা তোমাদের মাকে নিয়ে শান্তিতে থেকো। আপাকে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছি, তুমি আমাকে মাফ করে দিও।

আমি কোনো ছেলের কারণে এটা করছি না, সেই ছেলেও আমাকে অনেক বুঝিয়েছে, তোমরা তাকে কিছু বলো না। আমি তাকেও (সেই ছেলে) অনেক কাঁদিয়েছি। আব্বা তুমিও আমাকে মাফ করে দিও। আমি মরে গেলে তোমাদের কেউ অপমান করবে না। সবাই শান্তি পাবে। আমি মরে গেলে তাকে ফোন দিয়ে বলো, তাকে একটা কথা দিয়েছিলাম সেটা যেন রাখে।
ভালো থেকো।”

এরপর নিচের দিকে এক প্রান্তে ‘আমি মরে গেলেও তোমাদের মনে হবে’ আর আরেক প্রান্তে ইংরেজিতে ‘আই মিস ইউ’ লিখা আছে।

সুইসাইড নোটে যে ছেলের কথা উল্লেখ করে গেছে শিপা, সেই ছেলে কে, তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *