নিজস্ব প্রতিবেদক::::
যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগ নেতার পরিচয়ে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত রয়েছে গোলাপগঞ্জ ফরহাদ হোসেন গুলজার।গত ৪জুলাই,২০২৩ইং(মঙ্গলবার) যুক্তরাষ্ট্র সময় সকাল ১০ ঘটিকায় মিশিগানের হেমট্রামিক সিটির কমিশনার মুমিন আহমদদের বাসার সামনে এক মতবিনিময় সভা শেষে তাকে মারধর করেন নিজ দলের কয়েকজন নেতাকর্মী।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়,গত ৩জুলাই,২০২৩ইং(সোমবার) সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান আগমন উপলক্ষে মিশিগান মহানগর আওয়ামী লীগ ও মিশিগান স্টেট যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। রাত পোহালেই সকালে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ সিনিয়র নেতৃবৃন্দের উপস্থিততে ঘরোয়া পরিবেশে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। তখন সভা শেষে এক সিনিয়র নেতার সাথে তর্ক বিতর্কের মাধ্যমে গালিগালাজ করে এক পর্যায়ের তাকে হামলার চেষ্টা করে ফরহাদ হোসেন গুলজার। এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন নেতাকর্মী তার আচরণে ক্ষিপ্ত হয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদে তাকে মারধর করে আহত করেন।অতঃপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত অতিথি সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে নেতাকর্মীদের বুঝিয়ে ফরহাদ হোসেন গুলজার কে উদ্ধার করেন।বর্তমানে সে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিশিগান স্টেট যুবলীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা প্রতিবেদককে জানান,ফরহাদ হোসেন গুলজার বিগত ৬/৭ বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। আমাদের জানামতে সে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল এমনকি বর্তমানে সে বিএনপির এজেন্টের দায়িত্ব পালন করছে।মিশিগান স্টেট যুবলীগের সক্রিয় কমিটি থাকলেও সে বিগত ২ বছর আগে দলীয় কমান্ড ছাড়া নিজ ইচ্ছায় ২০/২২ জনকে নিয়ে মৌখিকভাবে ঘোষণা করে যুবলীগের কমিটি গঠন করে। আমরা মনে করি সে ভোগের রাজনীতির জন্য আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে।সে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে থাকাকালীন নানান অসামাজিক কাজে লিপ্ত রয়েছে।গত মঙ্গলবার আমাদের সকলের সামনে আমাদের সিনিয়র নেতার উপর হামলা করার চেষ্টা করলে আমরা নেতাকর্মী তাকে মারধর করতে বাধ্য হই। তার বসতবাড়ি গোলাপগঞ্জের লক্ষনাবন্দ গ্রামে।
গোলাপগঞ্জের লক্ষনাবন্দ গ্রামের এক মুরব্বি জানান,আমাদের গ্রামের সন্তান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ফরহাদ হোসেন গুলজার। লক্ষনাবন্দ ক্লাবের পাশেই তার বসতবাড়ি। সে বিগত কয়েকবছর আগে জীবিকার তাগিদে ও তার পরিবারের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে যায়।সে দেশে থাকাকালীন বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিল ও তার বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে।সে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্বদেশ সফরে এসেছিল। দেশে থাকাকালীন সে প্রবাসী হয়েও গ্রামের মসজিদের একটি সমস্যা নিয়ে সারা গ্রামবাসীকে গালিগালাজ করায় আমরা তাকে তাড়িয়ে দেই।পরের দিন সে গোলাপগঞ্জ ও সিলেট শহর থেকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী এনে এলাকার যুবক ও মুরব্বিদের ডেকে প্রাণনাশের হুমকি ধামকি প্রদান করে।অতঃপর এক পর্যায় আমরা গ্রামবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্র দেখিয়ে প্রতিবাদ করি তাৎক্ষণিক সে তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারপর সে আর গ্রামে আসেনি সিলেট শহরে একটি ভাড়া বাসায় কয়েকদিন বসবাস করে যুক্তরাষ্ট্রের চলে যায়।
সিলেট জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা জানান,
আমরা দেশের রাজনীতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের সাথেও সম্পৃক্ত আছি।আমাদের আত্মীয় স্বজন রয়েছেন যারা একসময় দেশে ছাত্র রাজনীতি করে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতি করছে। তাদের সাথে ফরহাদ হোসেন গুলজারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফলে আমাদেরও অনেক হয়রানি করছে। কারণ সে দেখছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা তাদের সাথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছি।সে তাদের সাথে প্রতিহিংসার জেরে আমাদেরকে দেশে সফরে এসে ফোন দিয়ে হুমকি ধামকি প্রদান করে। এরপর আমরা কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে খুঁজে পেয়ে প্রতিবাদ করি।ঘটনাস্থলে তার এলাকার কয়েকজন মুরব্বি এসে আমাদের সান্ত্বনা দেন এবং তাকে আমাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী করে বিষয়টি মিমাংসা করেন।
ঘটনার বহুল আলোচিত ফরহাদ হোসেন গুলজারকে মারধর করলেও তার আচরণের প্রতি সবাই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।এছাড়াও বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে সমাধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট সিনিয়র নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সহযোগিতা কামনা করেন তৃনমূল আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ।
শেয়ার করুন