রিজিক মহান আল্লাহর অন্যতম নেয়ামত। ইবাদত কবুলের অন্যতম শর্তও হালাল রিজিক। হালাল রিজিকের জন্যই মানুষ এত পরিশ্রম করে। মানুষ অনেক সময় ভালো ও পর্যাপ্ত রিজিক ভোগ করলেও হঠাৎ কোনো এক অদৃশ্য কারণে রিজিক কমে যেতে শুরু করে। কিন্তু কেন মানুষের রিজিক কমে যায়?
পাপ কাজে লিপ্ত থাকা : মানুষের রিজিক কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ গুনাহ বা পাপাচারে লিপ্ত থাকা। সাওবান (রা.)–র বিবরণে আছে যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সৎকর্ম মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে এবং দোয়া মানুষের তাকদির পরিবর্তন করতে পারে। আর মানুষ তার পাপ কাজের কারণে প্রাপ্য রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৪,০২২)
হারাম উপার্জন : রিজিক কমে যাওয়ার আরেকটি প্রধান কারণ হারাম উপার্জন। আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে মানবজাতি! তোমরা পৃথিবী থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু ভক্ষণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৬৮) স্রষ্টার এই নির্দেশ অমান্য করে হারাম উপার্জন করলে রিজিকে বরকত কমে যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল ও বৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করে, তাকে বরকত দান করা হয়।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,০৫২)
সুদের কারবার করা : সুদের কারবারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবেও জড়িত থাকা উচিত নয়। সুদের কারবারে ব্যবসার বরকতও নষ্ট হয়ে যায়। আল্লাহ কোরআনে স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ‘আল্লাহ সুদকে ধ্বংস করে দেন এবং সাদাকাকে বর্ধিত করে দেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৭৬)
ধোঁকা দেওয়া : মানুষকে ধোঁকা দিলে এবং মিথ্যা কসম খেলে আয়-উপার্জনের বরকত চলে যায়। আর বরকত চলে যাওয়া মানে রিজিক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বেচাকেনা করার সময় তোমরা অধিক কসম করা থেকে সাবধান থেকো। কারণ, মিথ্যা কসমের দ্বারা বিক্রি বেশি হয়, কিন্তু বরকত ধ্বংস হয়ে যায়।’ (মুসলিম, হাদিস: ১,৬০৭)
কৃতজ্ঞতা আদায় না করা : মানুষ যখন তার প্রাপ্ত নিয়ামতের শোকরিয়া আদায় না করে তখন তার থেকে সে নিয়ামত ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আর এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানবজীবন এবং কমে যায় রিজিক। আল্লাহ কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে মনে রেখো, আমার শাস্তি বড়ই কঠোর।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৭)