রাঙ্গামাটিতে যথাযত মর্যাদায় ৪৭তম জাতীয় শোক দিবস পালন

জাতীয়

মো আরিফুল ইসলাম,রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির জন্য বেদনাবিধুর দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতকচক্রের হাতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়।রাঙ্গামাটিতে যথাযত মর্যাদার মাধ্যমে দিনটি পালন করছেন উপজেলা প্রশাসনসহ বিভীন্ন পেশা শ্রেনির মানুষেরা।

দিনের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে দিবসটির কার্যবিধি শুরু হয়।এরপর জেলা প্রশাসন ও বিভীন্ন দপ্তর কতৃক আলোচনা সভা,মিলাদ মাহফিল, দিনব্যাপী চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগীতা,বৃক্ষরোপণ, ত্রান ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়।

শোকের এই দিনটিতে সেদিন জাতির পিতার সঙ্গে তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও জাতির পিতার ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদও নিহত হন।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা তাদের বক্ত্যব্যে জানান,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আত্মীয় এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা। উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট খুনিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্কের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়।বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই।’ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েও ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেন।বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব, তার চেতনা অবিনশ্বর। বাঙালি জাতির অস্থি-মজ্জায় মিশে আছেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চিরপ্রবাহমান থাকবে।জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ২৯৯নং আসনের সংসদ সদস্য দিপঙ্কর তালুকদারের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পন করা হয়।এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হাজী মুছা মাতাব্বর,জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী সাধারন সম্পাদক নুর মুহাম্মদ কাজল,,ছাত্র লীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজনসহ বিভীন্ন অংগ সংঠনের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে জেলা প্রশাসক মো মিজানুর রহমানসহ বিভীন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা পুষ্পার্ঘ অর্পনসহ বিভীন্ন আয়োজনের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করা হয়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *