রিজার্ভে যুক্ত হলো আইএমএফের ঋণ

জাতীয়

দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের জন্য অনুমোদিত আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ। এই অর্থের পরিমাণ ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।

তিনি বলেন, আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে অনুমোদিত ৬৮ কোটি ৯৮ লাখ ডলার রিজার্ভের সাথে যুক্ত হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও এডিবিসহ অন্যান্য ঋণের আরও ৬২ কোটি ডলার যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি মাসে রিজার্ভে যুক্ত হবে ১৩১ কোটি ডলার। আর্থিক সংকটের সময়ে এটা আমাদের স্বস্তির খবর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার দেশের রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের ঋণ যুক্ত হওয়ায় রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী বিপিএম-৬ অনুযায়ী হিসাব করা হলে রিজার্ভ দাঁড়াবে ১৯ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার।

এরআগে গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯ টায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অবস্থিত আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব অনুমোদন করে। ওই দিনই অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

এদিকে বাংলাদেশ গত জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারায় আইএমএফের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে যে অব্যাহতি চেয়েছিল, তা অনুমোদন করেছে সংস্থাটির পর্ষদ। একই সঙ্গে ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ সংরক্ষণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিসেম্বর শেষে নিট রিজার্ভ থাকার কথা ছিল ২৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। জুন শেষে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করা হয়নি।

শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আইএমএফের এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগ। অন্য কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে এতে সংযুক্ত ছিলেন বাংলাদেশে আইএমএফের প্রতিনিধি জয়েন্দু দে। সংবাদ সম্মেলনের আগে বাংলাদেশের ওপর কান্ট্রি রিপোর্ট প্রকাশ করে আইএমএফ। ওই রিপোর্টে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা এবং করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা রয়েছে।

আইএমএফের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ পরিমাণগত পারফরম্যান্স ক্রাইটেরিয়ার তিনটি বিষয়ের মধ্যে রিজার্ভ ছাড়া বাকি দুটি অর্জন করেছে। এ দুটি শর্ত সরকারের বাজেট ঘাটতি এবং সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত। চারটি ইন্ডিকেটিভ টার্গেটের মধ্যে কর সংগ্রহ ছাড়া বাকি তিনটি পূরণ করেছে। এই তিনটি সরকারের সামাজিক ব্যয়, মূলধনী বিনিয়োগ এবং মুদ্রা সরবরাহ সংক্রান্ত শর্ত। এছাড়া ব্যাংক কোম্পানি আইন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনসহ কাঠামোগত সংস্কারের বেশিরভাগ শর্ত পূরণ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *