লিডিং ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষককে গণধোলাই

সিলেট

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে ছবি আঁকার সময় পেছন থেকে গাড়ির ধাক্কা দেওয়ার জেরে সিলেট লিডিং ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষককে গণধোলাই দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে ওই দুই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কাছে হস্তান্তর করেন তারা। ক্ষতিপূরণস্বরূপ পরে শিক্ষকদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আদায় করা হয়।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টায় জাবির পুরাতন কলা ও মানবিকী অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

গণধোলাইয়ের শিকার ওই দুই শিক্ষকের একজন লিডিং ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার এবং আরেকজন জুনিয়র লেকচারার। আহত ওই ছাত্রীর নাম সামিয়া আক্তার রিয়া। তিনি জাবির চারুকলা বিভাগের প্রথম বর্ষের (৫১ ব্যাচ) শিক্ষার্থী।

জানা যায়, দুপুর বারোটায় পুরাতন কলা ও মানবিকী অনুষদের সামনের চত্বরে বেঞ্চে বসে ছবি আঁকা অনুশীলন করছিলেন সামিয়া। এসময় জাবিতে ঘুরতে আসা ওই দুই শিক্ষকের গাড়ি পেছনে গিয়ে ইউটার্ন নেওয়ার সময় সামিয়াকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। তাৎক্ষণিক সামিয়ার সহপাঠীরা ওই শিক্ষকদের গণধোলাই দিয়ে নিরাপত্তা শাখার কাছে তুলে দেন।

এসময় লিডিং ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষকের গাড়ি জব্দ করে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে যান প্রহরীরা। পরে চারুকলা বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হয়ে আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসাবাবদ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। সবশেষ বেলা আড়াইটায় ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও মুচলেকা দিয়ে মুক্তি পান ওই দুই শিক্ষক।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, চারুকলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে গাড়ির ধাক্কা দিয়ে আহত করার জেরে সিলেটের এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের গাড়ি আমরা আটক করি। পরে জরিমানা দেওয়ায় তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল বলেন, ওই শিক্ষকদের মারধরের সময় আমি ছিলাম না। শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে হয়তো এটা ঘটাতে পারে। পরে ওই দুই শিক্ষক জরিমানা দিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেছেন। শুনেছি, আহত ছাত্রী এখন সুস্থ আছে।

চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শামীম রেজা বলেন, সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির ২ শিক্ষকের গাড়ির ধাক্কায় আমাদের এক ছাত্রী আহত হয়। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হলে বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে ডাক্তার তেমন কোনো ইনজুরি নেই বলে জানায়। তবে ছাত্রীর পিঠে ব্যাকপেইন রয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির কারণে প্রক্টর অফিসের তত্বাবধানে ওই শিক্ষকদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা আপাতত ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে। ভবিষ্যতে বড় কোনো ঝুঁকি দেখা দিলে ওই শিক্ষকরা দায়ভার নিবেন বলে জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *