ইরানের দক্ষিণাঞ্চলে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। স্থানীয় সময় শনিবার (২ জুলাই) ভোররাতে দেশটির হরমোজগান প্রদেশে আঘাত হানে এ ভূকম্পন। তবে এর কিছুক্ষণ পরেই আরও দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে ওই এলাকায়, যার সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৩। এতে ইরানের পাশাপাশি প্রতিবেশী বাহরাইন, সৌদি আরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানও কেঁপে উঠেছিল বলে জানিয়েছে ইউএসজিএসসি। খবর রয়টার্সের।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ভোররাতে দেশটিতে আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ১। হরমোজগান প্রদেশের জরুরি ব্যবস্থাপনা প্রধান মেহরদাদ হাসানজাদেহ বলেছেন, দুর্ভাগ্যবশত এখন পর্যন্ত আমরা পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। আহত আরও ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ বলেছে, প্রথম ভূমিকম্পটির পরে ৬ দশমিক ৩ এবং ৬ দশমিক ১ মাত্রার আরও দুটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে দেশটিতে। এতে সায়েহ খোশ গ্রামটি পুরো তছনছ হয়ে গেছে।
মেহরদাদ হাসানজাদেহ জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী সবাই প্রথম ভূমিকম্পের আঘাতে মারা গেছেন। প্রথমটির পর মানুষজন ঘরের বাইরে থাকায় পরের দুই ভূমিকম্পে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ইরানি গণমাধ্যমে প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ দশমিক ১ বলা হলেও ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (ইএমএসসি) জানিয়েছে, এর মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২ এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাও (ইউএসজিএসসি) ভূমিকম্পটির মাত্রা ছয় বলে জানিয়েছে। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ইরানের হরমোজগান প্রদেশের বন্দর এ খামির শহর থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরে।
এতে ইরানের পাশাপাশি প্রতিবেশী বাহরাইন, সৌদি আরব, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানও কেঁপে উঠেছিল বলে জানিয়েছে ইউএসজিএসসি।
কিছুদিন আগেই আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে আঘাত হেনেছিল ৬ দশমিক ১ মাত্রার প্রবল ভূমিকম্প। এতে পাকিস্তানে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও আফগানিস্তানে প্রাণ হারান এক হাজারের বেশি মানুষ।
ভূমিকম্পটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশ। সেখানে তিন হাজারের বেশি ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়। এতে হতাহত হন আড়াই হাজারের বেশি লোক।
গত ২২ জুন ভোররাতে মানুষজন ঘুমিয়ে থাকার সময় ভূমিকম্প আঘাত হানায় এবং পাহাড়ি অঞ্চলটির বেশিরভাগ ঘরবাড়ি মাটির হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শেয়ার করুন