শরণখোলায় ছাত্রীকে শারিরীক নির্যাতন

জাতীয়

ফরিদুল ইসলাম, শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি :

জোহরের নামাজ পড়ার জন্য ওজু করতে বলেন মাদ্রাসা সুপার ওয়াদুল হক। ওই সময় পুকুর ঘাটে ছেলেরা ওজু করতে থাকায় আবিদা নামের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী দেরী করায় তাকে শারিরীকভাবে প্রহার করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২৬ জুলাই বুধবার বেলা দেড়টার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা এজিএম দাখিল মাদ্রাসায় এ ঘটনাটি ঘটে। আহত ছাত্রীকে উদ্ধার করে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সহ স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ও
অভিভাবকরা মাদ্রাসা সুপারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।

উত্তর তাফালবাড়ি গ্রামের মাওলানা এমাদুল হকের পুত্র ও আহত শিক্ষার্থীর ভাই রেদোয়ান জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে জোহরের নামাজ আদায় করার উদ্দেশ্যে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা এজিএম দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক শিক্ষার্থীদের ওজু করার জন্য বলেন। ঐসময় আমার বোন ছেলেদের সামনে মুখ খুলে পুকুরে ওজু করতে যেতে না রাজি না হওয়ায় আমার বোন আবিদা সুলতানাকে মাদ্রাসা ভবনের দোতলা থেকে মারতে মারতে পুকুর পাড়ে নেয়ার পথে গাছের সাথে ধাক্কা লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। সেখান থেকে তুলে বোনকে পুকুর ঘাটে নিয়ে যায় সুপার। ওজু করার সময় আমার অজ্ঞান হয়ে গেলে মাদ্রাসার একটি কক্ষে নিয়ে রাখে। পরে আমি ঘটনাটি জানতে পেরে অজ্ঞান অবস্থায় বোনকে উদ্ধার করে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পথে সুপার ওবায়দুল হক সহ আরো ২/৩ জন শিক্ষক হাসপাতালে ঢুকতে বাধা প্রধান করেন।

আহত শিক্ষার্থী আবিদা সুলতানা বলেন, ‘আমাদের মাদ্রাসার সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক হুজুর দুপুরে মাদ্রাসার ছেলে-মেয়েদের একসঙ্গে পুকুরে ওজু করতে যেতে বলে। ছেলেদের সামনে মুখ খুলে পুকুরে ওজু করতে যেতে না চাইলে হুজুর আমাকে মাদ্রাসা ভবনের দোতলা থেকে মারতে মারতে পুকুরের কাছে নিয়ে যাবার
পথে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করতে থাকে। পওে আমার ভাই রেদোয়ান আমাকে উদ্ধার করে হাসাপাতালে আনার পথে হাসপাতাল গেটে বাধা দেয় সুপার সহ একাধিক শিক্ষক।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য মাদ্রাসা সুপার মাওলানা ওবায়দুল হক সেলিমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি কলটি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আজমল হোসেন মুক্তা বলেন, আগামী ২৮ জুলাই সকালে ম্যানেজিং কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। অভিযোগ প্রমানিত হলে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *