শরণখোলায় পাওনাদারের ভয়ে মৃতদেহ ফেলে স্ত্রী সন্তানদের পলায়নের ৫ ঘন্টা পর জানাজা!

জাতীয়

ফরিদুল ইসলাম,
শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি :

পাওনাদারদের ৬ লক্ষ টাকা পরিশোধের ভয়ে অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মাষ্টার আজিজুর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তনদের মৃতদেহ ফেলে সটকে পড়ার ঘটনার পাঁচ ঘন্টা পর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১২ জুলাই বুধবার বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নূর-ই আলম সিদ্দিকী বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, প্রথমিক শিক্ষা অফিসার ও শিক্ষক সমিতির নেত্রীবৃন্ধ সহ সমাজ সচেতন ব্যক্তিদের দ্বায়িত্ব প্রদান করেন। ঘটনার ৫ ঘন্টা পর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানদের সাথে কথা বলে তারা কিছু টাকা দেয়ার সম্মতি দেওয়ায় ও বাকি টাকা ভাইস চেয়ারম্যান আদায় করে দিবেন এই আশ্বাসে পাওনাদাররা জানাযা পড়ার অনুমতি দেয়।

পরিবার ও পাওনাদার সূত্রে জানা গেছে, শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও তাফালবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আজিজুর রহমান মৃধা স্বাধীনতা পরবর্তী শিক্ষকতা পেশার সাথে যুক্ত হন। গত ২০ বছর পূর্বে প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানদের ফেলে রায়েন্দা বাজারস্থ পাঁচরাস্তা এলাকায় নতুন বাড়ী করে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে বসবাস শুরু করে এবং প্রথম স্ত্রী পরিবারের খোঁজ খবর রাখা বন্ধ করে দেয়। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তার দুই পুত্র ও তিন কন্যা রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রীর সংসারে দুই পুত্র ও এক কন্যা নিয়ে তার সংসার জীবন। সম্পত্তির বেশিরভাগ অংশ বিক্রি করে প্রায় কোটি টাকা স্ত্রীর একাউন্টে জমা দেয় বঞ্চিত হয় প্রথম ঘরের স্ত্রী ও সন্তানেরা। গত দুই বছর পূর্বে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে মাষ্টার আজিজুর রহমান। ধীরে ধীরে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটে।

গত ১১ জুলাই বিকাল ৪ টায় রায়েন্দা বাজারস্থ পাঁচরাস্তা এলার বাসায় মৃত্যুবরণ করেন আজিজুর রহমান। মৃত্যুর পর বড় স্ত্রী সন্তানেরা তাদের বাড়িতে বাবার মৃতদেহ দাফন করার দাবি করলে দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার সন্তানেরা তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেয়। পরে ১২ জুলাই সকাল ১০ টায় জানাযার সময় নির্ধারণ করে এবং জানাযা শুরু করবে ঠিক সেই মুহুত্রে উপজেলার চাল রায়েন্দা গ্রামের অপু ১ লক্ষ ৫০ হাজার সহ রায়েন্দা বাজারের ৫/৬ জন ব্যবসায়ীরা প্রায় ৬ লক্ষ টাকা পাওনা দাবি করে এবং পাওনা টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত জানাযা পড়ানো যাবেনা বলে তারা অভিযোগ করেন। এঘটনা শোনার পরে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পুত্র সন্তানেরা বাবার মরদেহ জানাযা মাঠে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

এ ব্যপারে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ বলেন নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে ও সকলের সহযোগীতায় তিনি এ কাজটি সমাধান করতে পেরেছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *