ঢালিউডে একই দিনে এক ছবিতে দেখা মিলল দুই নায়িকার। একজন মানসী প্রকৃতি, অন্যজন সায়মা স্মৃতি। গত শুক্রবার দেশের ২৪ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘যন্ত্রণা’ ছবিটি। এ ছবির মাধ্যমে তাঁদের দেখেছেন ছবিপ্রেমীরা। আরিফুর রহমান পরিচালিত এ ছবিতে একজন নায়িকার অভিষেক ঘটলেও আরেকজনের ৪ নম্বর চলচ্চিত্র। চলুন জেনে নেওয়া যাক সায়মা স্মৃতির সিনেমায় যাত্রা ও আগামী দিনের পরিকল্পনা।
শুক্রবার ‘যন্ত্রণা’ ছবিটি মুক্তি পেলেও তার কয়েক দিন আগে থেকে প্রচারণায় সরব সায়মা স্মৃতি। মুক্তির আগে টেলিভিশন ও পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। পরে প্রেক্ষাগৃহে ঘুরছেন। দর্শকের সঙ্গে কথা বলছেন। মতামত শুনছেন। ওসব আমলে নিচ্ছেন। অন্যরকম একটা সময় পার করছেন। জীবনে এমন সুন্দর সময়ের মুখোমুখি এর আগে কখনো হননি তিনি। রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হয়ে অভিনয় করবেন, তা–ও আবার সিনেমায়, এমনটি ছিল ভাবনার অতীত। সেই স্মৃতির প্রথম সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। দর্শকের সঙ্গে প্রেক্ষাগৃহে বসে তা দেখেছেন তিনি।
ছুটির দিন শুক্রবারে দর্শকের সঙ্গে ছবিটি দেখেছেন সায়মা স্মৃতি। কথা বলেছেন তাঁদের সঙ্গে। তিনি জানালেন, লায়ন্স, আজাদ ও নিউগুলশান প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছেন। স্মৃতি বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিল একরকম। কিন্তু ভাবিনি এত দর্শক হবে। সিনেমা হলে অনেক দর্শক দেখেছি। মনটা ভরে গেছে। ভাবতেও পারিনি এত দর্শক আমার প্রথম সিনেমায় পাব।’
ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সায়মা স্মৃতি। বিনোদন অঙ্গনে তাঁর যাত্রা শুরু অমিতাভ রেজার বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজের মধ্য দিয়ে। কাজ করেন অনম বিশ্বাসের একটি বিজ্ঞানচিত্রেও। অভিনয়ে অভিষেক হয় ছোট পর্দায় তানিম রহমান পরিচালিত ‘এন্ড্রো’ নামের একটি খণ্ড নাটকে।
সায়মা স্মৃতি বলেন, ‘বিজ্ঞাপনচিত্রে যখন কাজ করি, তখন ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। বিনোদন অঙ্গনে কাজ করার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। শাবনূরের সিনেমা দেখে অনুপ্রেরণা পাই। কয়েক বছর পর চলচ্চিত্রের খারাপ অবস্থা দেখে আবার মন ভেঙে যায়। মনকে অন্যদিকে ফোকাসের চেষ্টা করি। কিন্তু মনের মধ্যে অভিনয়ের বসত ছিল। “পরাণ” ও “হাওয়া” দেখে আবার সাহস পাই। হলমুখী দর্শক দেখে মনে হয়েছে, দর্শক আবারও আস্তে আস্তে বিশ্বাস করছে, বাংলা ছবি ভালো হচ্ছে। পরিবার–পরিজন নিয়ে দেখার মতো পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তখন সিদ্ধান্ত নিই সুযোগ পেলে বড় পর্দায় কাজ করব। সুযোগ হয় “যন্ত্রণা”য় কাজের। আমি আশাবাদী হয়ে উঠলাম।’
সায়মা স্মৃতির প্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। তাঁর অভিনীত সবচেয়ে প্রিয় সিনেমা ‘আনন্দ অশ্রু’। এই ছবি যে কতবার দেখেছেন, তার হিসাব নেই বলে জানালেন এই তরুণ নায়িকা।
স্মৃতি বলেন, ‘বড় পর্দায় এলাম, ফ্লপ মারলাম; তারপর দেখা গেল আর কোনো ডাক পেলাম না। এমনটি আমি চাইনি। তাই সময় নিয়েই সিনেমাকে হ্যাঁ বলেছি।’ তরুণ এই নায়িকা জানালেন, ‘যন্ত্রণা’ মুক্তির আগে নতুন দুটি সিনেমায় অভিনয়ের কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়। তবে ছবি দুটি সম্পর্কে পুরো তথ্য এখনই জানাতে চান না। আরও কয়েক দিন সময় চান। তবে এটুকু জানিয়ে রাখলেন, এ মাসের শেষের দিকে শুটিং শুরু করবেন তিনি।
পরিবারের কেউ বিনোদন অঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত নন। রক্ষণশীল পরিবারে সায়মা স্মৃতিরা এক ভাই এক বোন। গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর। নানার বাড়ি চাঁদপুর। বেড়ে ওঠা, শৈশব ও কৈশোর কেটেছে ঢাকায়।
তিনি জানান, প্রথম সিনেমা ‘যন্ত্রণা’য় নায়ক আদর আজাদ হলেও সামনে সায়মন এবং বাপ্পীর সঙ্গে অভিনয়ের কথাবার্তা চলছে। কয়েকজন পরিচালক ফোন করেছেন। তিনি আশাবাদী বড় পর্দায় ব্যস্ত হয়ে উঠতে পারবেন। নিজেকে সেভাবে তৈরি করছেন। নাচ, ফাইট ও অভিনয় শেখার চর্চা চলছে।
স্মৃতির মতে, ‘আমার এই জীবনে যদি পাঁচটা সিনেমাও করি দর্শক যেন বলেন, মেয়েটি দেখতে সুদর্শনা এবং সব চরিত্রে মানিয়ে নেওয়ার মতো একটা উপাদান আছে।’ স্বপ্ন দেখেন শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয়ের। তিনি বলেন, ‘সবারই চাওয়া থাকে সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করার। আমারও চাওয়া সেই শাকিব ভাইয়ের মতো সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করা। কারণ, সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ করতে পারলে বিশাল দর্শকের মধ্যমণি হয়ে থাকা যায়।’
শেয়ার করুন