
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ সোমবার। এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারা দেশের মতো রংপুরেও শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। তবে দলটির ডাকা কর্মসূচির কোনো প্রভাব দেখা যায়নি নগরীতে। বলতে গেলে শাটডাউন ডেকে লাপাত্তা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গতকাল রোববার আওয়ামী লীগের ডাকা শাটডাউন কর্মসূচি ঠেকাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিপুল নেতাকর্মী নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট দেখা গেছে। তাদের অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশও বেশ সতর্ক ছিল।
রংপুর সাইড বেকারির স্বত্বাধিকারী ও চেম্বারের সদস্য ব্যবসায়ী সুমন মিয়া ও হোটেল ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, রংপুরে আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেরাই লাপাত্তা হয়ে গেছেন। তাদের কোনো পাত্তা নেই। রংপুরের মানুষ জুলাইয়ে শহীদদের পাশে রয়েছে। হাসিনা ও তার দোসরদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক সে কামনাই করি। এ দেশে আওয়ামী লীগের মতো নিষ্ঠুর শাসক ফিরে আসুক তা চাই না। আমরা চাই ছাত্র-জনতার খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি।
অটোচালক রহমত আলী ও বশির মিয়া বলেন, কীসের শাটডাউন! যানজটের কারণে নগরীর মোড়গুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। শাটডাউনের কথা আমরা মানুষের মুখে শুনেছি, বাস্তবে দেখিনি।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জানান, স্বৈরাচার হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠন শাটডাউন ডেকেছে। এই কর্মসূচির নামে অপতৎপরতা যেন চালাতে না পারে সেজন্য আমাদের নেতাকর্মীরা মাঠে ছিল। আমরা এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছি।
জামায়াতে ইসলামীর জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হক জানান, গণহত্যাকারী হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তার দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নাশকতা করলে আমরা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।
পীরগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম শফিক, বদরগঞ্জ থানার আতিকুর রহমান আতিক ও রংপুর মেট্রোর কোতোয়ালি থানার আতাউর রহমান জানান, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের ডাকা শাটডাউনের নামে যেকোনো ধরনের অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসন রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিটি থানায় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থার পাশাপাশি আমরা ইন্সপেক্টররাও নিজে মাঠে নেমে কাজ করছি।
রংপুর জেলার পুলিশ সুপার আবু সাইম জানান, রংপুরে বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে নাশকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের অধিক আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শাটডাউনে নাশকতা ঠেকাতে ১৩ নভেম্বর থেকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, রংপুর নগরী পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দিনরাত কাজ করছে পুলিশ।
প্রধান সম্পাদকঃ সারওয়ার খান
সম্পাদকঃ জাকের খান (রুবেল)
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫