শাহজালাল মাজার এলাকায় ‘হাফ প্যান্ট পরে ঢোকা নিষেধ’!

সিলেট

হযরত শাহজালাল রাহ.-এর মাজার। সিলেট মহানগরের প্রাণকেন্দ্র দরগাহ এলাকায় এ মাজার অবস্থিত। সুলতান শামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের শাসনকাল- ১৩০৩ সালে হযরত শাহজালালের হাতে বিজিত হয় সিলেট অঞ্চল। সেই সময়ে তুরস্কের কুনিয়া শহর থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে ৩১৩ জন শিষ্যসহ সিলেটে আসেন এই ওলি।
১৩৪০ সালে হযরত শাহজালাল মৃত্যুবরণ করলে তাঁকে সিলেট শহরের দরগাহ এলাকায় সমাহিত করা হয়। বর্তমানে মাজার এলাকায় শত শত জালালি কবুতর, পুকুরভর্তি গজার মাছ ছাড়াও শাহজালালের ব্যবহৃত তলোয়ার রক্ষিত আছে।

সারা বছরই হযরত শাহজালাল রাহ.-এর মাজার জিয়ারতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ আসেন। এছাড়া দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সিলেটে আসলে একবার হলেও ঘুরে যান শাহজালাল মাজার।

তবে সম্প্রতি মাজার এলাকায় ‘হাফ প্যান্ট’ পরে না ঢুকতে নিষেধাজ্ঞামূলক সাইনবোর্ড টানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) মাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাজারের প্রবেশের মূল ফটক ও পেছনের প্রবেশমুখে কয়েকটি সাইনবোর্ড টানানো। এতে লেখা- ‘হাফ প্যান্ট পরে মাজারের গেইটের ভিতরে প্রবেশ নিষেধ। আদেশক্রমে কর্তৃপক্ষ।তবে কী কারণে হঠাৎ এই নিষেধাজ্ঞা তা জানা যায়নি। রবিবার বিকালে এ বিষয়ে শাহজালাল দরগাহ মাজার অফিসে গিয়ে মোতাওয়াল্লি ফতেহ উল্লাহ আল আমান বা দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। অফিসে থাকা একজন এসময় মোতাওয়াল্লির মুঠোফোন নাম্বার দিতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় তিনি নিজের নাম জানাতে এবং এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতেও রাজি হননি।
এদিকে, মাজার কর্তৃপক্ষের নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় সিলেটের মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের ভার্চুয়াল মাধ্যম ফেসবুকেও এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।কেউ কেউ বলছেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। শাহজালাল মাজার একটি পবিত্রতম স্থান। এখানে হাফ প্যান্ট পরে ঘুরাফেরা করা ঠিক নয়। এমন সাইনবোর্ড টানিয়ে কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন।
আবার অনেকে বলছেন, এমন সাইনবোর্ড টানানো ঠিক হয়নি। এ স্থানকে শুধু মাজার হিসেবে দেখলে হবে না। এটি সিলেটের একটি দর্শনীয় ও ঐতিহ্যবাহী স্থান। অনেক মত ও আদর্শের মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। এমনকি মুসলিম ছাড়া ভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষও আসেন ঘুরতে। এ অবস্থায় এমন সাইনবোর্ড টানানো পর্যটকদের আনাগোনা কমিয়ে দিতে পারে।
তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, পাপ-পুণ্যের বিবেচনায় যদি এমন সাইনবোর্ড টানানো হয়- তবে মাজার এলাকায় যে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে রাত-দিন, সে বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ?

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *