মহান মে দিবস উপলক্ষে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে লাল পতাকা মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। (১ লা মে) সোমবার সকাল ১১টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের হয়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা আহ্বায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক প্রণব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেট জেলা সদস্য জুবায়ের আহমদ চৌধুরী সুমন, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নাজিকুল ইসলাম রানা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের আহ্বায়ক মাছুমা খানম, সংগ্রাম পরিষদের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর আহ্বায়ক সনজয় শর্মা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর বেলাল আহমদ, ইয়াছিন আহমদ, মিন্টু যাদব, শহীদ আহমদ, কাওছার হোসেন, জাহেদ আহমদ, চা শ্রমিক ফেডারেশনের করোনা কর্মকার, সংগ্রাম পরিষদের রুমন আহমদ, ইউসুফ আলী, ইরশাদ আলী, আনোয়ার হোসেন কুটি, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৩৭বছর আগে অগাষ্ট, স্পাইজ, সীমফেলডেন, লুই নিবোসহ অসংখ্য শ্রমিক নেতৃত্বের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের যে অধিকার অর্জিত হয়েছিল সেটির সাথে ন্যায্য মজুরির নিশ্চয়তাটিও যুক্ত ছিল। খাতা-কলমে ৮ ঘন্টার বিধান থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় কম মজুরি প্রদান, প্রকৃত মজুরি কমিয়ে দেওয়া, মজুরি এবং চাকরির সাথে উচ্চ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার শর্ত অরোপসহ নানা কৌশলে সেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হচ্ছে প্রায় প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষকে। অর্থাৎ শ্রমিক হারিয়েছে তার অর্জিত অধিকার। উৎপাদন আর সম্পদ বৃদ্ধির তুলনায় বৈষম্য বাড়ছে বহুগুন। বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির নব নব আবিস্কার মানব সমাজের কষ্ট লঘব এবং সমৃদ্ধির উপাদান না হয়ে আল্প কিছু মানুষের বিলাস আর সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের বেদনার কারনে পরিণত হয়েছে।
বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে ৭ কোটি ৩৪ লাখ শ্রমশক্তির মধ্যে ৬ কোটি ৫০ লাখ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত। তাদের নির্দিষ্ট কর্মঘন্টা, নিয়মিত মজুরি কিংবা আইনগত অধিকার কোনোটারই নিশ্চয়তা নেই। ২০০৬ সালে প্রবর্তিত এবং ২০১৩ ও ২০১৮ সালে সংশোধিত শ্রম আইনের ১৭৯ ও ১৮০ ধারার মাধ্যমে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সংকুচিত করা হয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা, শ্রম আইনের অগণতান্ত্রিক ধারা সমূহ ও সংসদে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল বাতিল করার আহ্বান জানান। বক্তারা অবিলম্বে নীতিমালা চূড়ান্ত করে প্রকৃত মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাটারি চালিত যানবাহনের লাইসেন্স প্রদান ও চা শ্রমিকদের এরিয়া বিল প্রদানসহ নগদ ৬০০ টাকা মজুরির দাবি জানান। বক্তারা, মহান মে দিবসে শ্রম অধিকার সংকোচনের সকল জাল ছিন্ন করে উৎপাদনের অনুপাতে মালিকানা এবং জীবীকার জন্য জীবন নয় বরং জীবনের জন্য জীবীকা এই নীতির ভিত্তিতে শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
শেয়ার করুন