বাজারদরের সাথে সংগতি রেখে নি¤œতম মজুরি ঘোষণা, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রনয়ণ এবং শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী সকল কালো আইন বাতিলের দাবিতে শুক্রবার (১২ জুন) বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ।
মিছিলটি সুরমা পয়েন্টে জমায়েত হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেটের ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সরকার’র সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. ছাদেক মিয়া’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির যুগ্ন সম্পাদক রমজান আলী পটু, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলার আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত, সিলেট জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়ন কোষাধ্যক্ষ সহিদুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কমিটির যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল মুমিন রাজু, সিলেট জেলা স’মিল শ্রমিক সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লুৎফুর রহমান, মীরের চক শ্রমজীবী সংঘের অন্যতম নেতা মো. পংকি মিয়া।
বক্তারা বলেন বর্তমানে জনজীবন নানাবিধ সংকটে জর্জরিত। সা¤্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের নির্মম শোষণ-লুণ্ঠনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতি মুদ্রাস্ফীতি-মূল্যস্ফীতি তথা সামগ্রিক সংকটে জনজীবন আজ বিপর্যস্থ। বিভিন্ন ব্যাক্তিমালিকানাধিন স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হচ্ছেনা শ্রমিকদের বেঁচে থাকার মতো নূন্যতম মজুরি। সরকারের পক্ষ থেকেও নি¤œতম মজুরি ঘোষনা করা হচ্ছে না। অন্যদিকে সরকার একের পর এক নিবর্তনমূলক কালা-কানুন জারি করে শ্রমিকদের অধিকার হরণ করে চলছে। হোটেল, গার্মেন্টন্স, নৌ-যান, স’মিল শ্রমিকরা যখন মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন শ্রমিকদের আন্দোলন দমনের লক্ষ্যে মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা আইন’ করা হয়। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে একমাত্র পথ আন্দোলন সংগ্রাম। আন্দোলন সংগ্রাম ব্যতিত শ্রমিকদের কোনো অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না তাই বক্তারা সকল শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান জানান।
২০১৮ সালের সরকারের জারি করা পরিপত্র পূর্ণবহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে শুভ আজাদ উনার বক্তব্যে বলেন, প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বৈষম্যের কারণে ধনিক শ্রেণীর মানুষদের জন্য শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থাকলেও ব্যাপক গরীব মানুষের সন্তানেরা এই সুযোগ থেকে বিরত করা হয়। নানা বাধা বিপত্তি অভাব-অনটন উপেক্ষা করে দেশের একটি অংশ যখন উচ্চ শিক্ষা শেষ করে তখন চাকরির অনিশ্চয়তায় বিপুল সংখ্যাক শিক্ষিত তরুণরা অভিশপ্ত জীবন যাপন করছেন। সরকার গুটিকয়েক চাকরির পরিক্ষার নামে ছাত্রদের এক অসুস্থ প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিচ্ছে। বেকারত্বের তুলনায় চাকরির নিয়োগ না দেওয়া এবং যা দেওয়া হচ্ছে তাতে বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা বিদ্যমান রেখে চলছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে রাষ্ট্রের পেটুয়া বাহিনীর বাঁধা প্রদানের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নেতৃবৃন্দ শ্রমিক স্বার্থ বিরোধী সকল শ্রম আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করে, গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রনয়ণ করা, সভা, সমাবেশ, ধর্মঘট এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত করা, শ্রমঘন এলাকায় প্রয়োজনীয় শ্রম আদালত গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করা। শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থ্া চালু করা, মালিক ও সরকারের উদ্যোগে শ্রমিকদের জন্য কোয়াটার তৈরি করে স্বাস্থ্যকর থাকার ব্যবস্থা ও বিনা বেতনে সন্তানদের বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান।