মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর ইউনিয়নের শাসন গ্রামের এলানপাড়ায় বেড়ে ওঠা মোঃ আসাদুল রহমান বয়স সবে মাত্র ৩৫ বছর । পিতা মোঃ মিজানুর রহমান কৃষি কাজ করতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং একপুত্র ও কন্যা সন্তানের জনক। মা, বাবা একভাই সহ ৬ জন সদস্যের পরিবার তাঁর। ছোটবেলায় থেকেই বাবার সাথে মাঠে কৃষি কাজে সহায়তা করা থেকেই কৃষি প্রতি আসক্তি ভালবাসা জন্মে, এখন আমাদের পরিবার কৃষি পরিবার বললেও ভুল হবেনা। আমি ১৩ বছর বয়স থেকে লেবু চাষ করে আসছি কারণ এখানকার পাহাড়ী আবহাওয়া লেবুচাষের জন্য উপযুক্ত। পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে চাষ শুরু করি ২০১৬ সাল থেকে । থাইল্যান্ডের রেডলেডি নামের জাতটি দিয়েই যাত্রা শুরু করি। । শ্রম ও খরচ কমে আসে ধীরে ধীরে । পেঁপে চাষে মন মনোনিবেশ করি আরো জুড়েসুরে। এক সময় রেডলেডি পেঁপে জাতটি তে মুজাহিক ভাইরাস নামে বালাই আক্রান্ত হয়ে গাছে কুঁকড়া দেখা দেয় , সকল ফলন নষ্ট হয় এবং একাধিক গাছ পুরুষ গাছ হিসেবে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। পরে হালছাড়েননি আসাদুল, রোগবালাই মুক্ত উন্নত জতের সন্ধান শুরু করেন এবং এ ব্যাপারে স্থানীয় উপসহকারী কৃষিকর্মকর্তা অজিতপালের সাথে দেখা করে পরামর্শ নিয়েছেন ।এরপর তিনি সরাসরি শ্রীমঙ্গলের কৃষিকর্মকর্তা জনাবা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি এর কাছ থেকে পেঁপে চাষের কলাকৌশল জেনে, উন্নতজাত এর সন্ধান পান, কৃষিক্ষেত্রে বাংলাদেশের মার্কেট লিডার লাল তীর সীড কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় বাবু পেঁপে সন্ধান পেয়ে, বীজ সংগ্রহ করেন । নতুন ভাবে ১০ বিঘা জমিতে লেবু চাষের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে লাল তীরের বাবু পেঁপের চাষের কার্যক্রম শুরু করেন। দিন যায়, মাস যায় প্রকৃতির নিয়মে নিজ সন্তানের মতো প্রতিটি গাছের যত্নে বেড়ে ওঠে সবকটি পেঁপে গাছ। কোনরকম রোগবালাই ছাড়া স্বল্প দিনে গাছে ফুল ফল আসে। চলতি মাসে ২০ টন পেঁপে ফল বিক্রি করে গুনছেন ৩ লাখ। টাকা। আগামী মাসে আরো ৫০ টন ফল বিক্রি অপেক্ষায় আছে। লাভের পাল্লা এবার দ্বিগুণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন আসাদুল ।গত ২৮ আগষ্ট লালতীর সীড লিমিটেড এর ডিভিশনাল ম্যানেজার তাপস চক্রবর্তী, রিজনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ গোলাম আজম, মাহমুদুল হাসান পিডিএস কোর্ডিনেটর, অমল রায় টিএম, মোঃ মিলন মিয়া সহ লাল তীর এর একটি টিম বাবু পেঁপের মাঠ ও কৃষক আসাদুলের সাফল্য দেখতে সরজমিন মাঠ পরিদর্শন করেন এবং বাবু পেঁপের ফলনে সকলেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এখন মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের বাবু পেঁপের সাফল্য নিজ চোখে দেখতে ভীড় জমাচ্ছেন আসাদুল এর পেঁপের মাঠে এবং অনেকেই ফোন করে সাফল্যে গল্প শুনছেন আসাদুল মুখ থেকে, থেমে নেই প্রচার প্রচারনাও এবার বাবু পেঁপে চাষে এগিয়ে আসচ্ছেন এলকার অন্যান্য কৃষক ভাইয়েরা। শ্রীমঙ্গল কৃষি কর্মকর্তা জনাবা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি আসাদুল এর লাল তীরের বাবু পেঁপে চাষে সাফল্যের জন্য উন্নতজাতের বীজ এর প্রশংসা এবং আশাদুলের চাষে কৃষকের আন্তরিকতা উভয় ফলনে ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন । তিনি রেডটাইম কে আরো বলেন বাড়ির পতিত পরিত্যক্ত জায়গায় বাবু পেঁপে চাষ করে অন্যরাও লাভবান হতে পারেন। লাল তীর সীড কোম্পানি লিঃ ব্যবসার পাশাপাশি সেবাধর্মী প্রতিষ্টান বটে, গাজীপুরে তাঁদের নিজস্ব আরএনডিতে নিয়মিত উন্নত জাত আবিষ্কার, উন্নয়ন, গবেষণা কার্যক্রম চলছে, কাজেই লালতীর কোম্পানির কোম্পানির সীড মানেই ভালো ফলন। এদিকে সম্ভাবনাময় লালতীরের বাবু পেঁপের জাতটি চমক দেখিয়ে পছন্দের শীর্ষ তালিকায় অবস্থান করছে বলে জানান কৃষক আসাদুল রহমান। আগামীদিনে লাল তীর সীড কোম্পানি লিমিটেডের বাবু পেঁপে বিশাল ভাবে করার পরিকল্পনা কথাও জানিয়েছেন তিনি।এখন প্রতিনিয়তই আশাদুলের স্বপ্নের বাবুপেঁপের বাগান দেখতে এবং প্রতিবেদন জন্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও টিভি চ্যানেলেরগুলো সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন আশাদুলের। তিনি এখন এলাকার জনপ্রিয় কৃষক বলে তাঁর মাঠ কৃষি বিভাগ সহ বিভিন্ন এজিও ও প্রকল্প পরিদর্শন করছেন।
শেয়ার করুন