স্বীকৃতি বিশ্বাস, যশোরঃ
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১২তম জন্ম তিথি উপলক্ষে
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে
শুরু হতে যাচ্ছে মহা বারুনীর স্নানোৎসব।
সোমবার (২০ মার্চ) ভোর সাড়ে তিনটায় স্নানোৎসব শুরু হয়ে চলবে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত।আর মেলা চলবে তিনদিন ব্যাপি।
জাগতিক পাপ-তাপ, দুঃখযন্ত্রণা থেকে মুক্ত হয়ে স্বর্গীয় পূর্ণলাভের আশায় হচ্ছে এ স্নানের মূল উদ্দেশ্য।
মেলা উপলক্ষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে লক্ষ-লক্ষ ভক্ত শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থান ও তীর্থভূমি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়িতে মিলিত হচ্ছে।
প্রতি বছর ওড়াকান্দি ঠাকুর বাড়িতে স্নান উৎসব ও বারুনী মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। স্নান উৎসবে যোগ দেয়া ভক্তদের পদচারনার সাথে ঢাক, ঢোল আর কাশারের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরা ঠাকুরবাড়িসহ আশেপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে।
ভক্তরা মন্দিরে পুজা অর্চনা শেষে ঠাকুর বাড়িতে অবস্থিত কামনা সাগর ও বাসনা সাগরে (মুলত পুকুর) স্নান করে ঠাকুরের কাছে পাপ থেকে মুক্তি, পুন্য লাভ ও দেশবাসীর মঙ্গল প্রার্থনা করে।
উল্লেখ্য শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ অবিভক্ত বাংলার গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার অন্তর্গত ওড়াকান্দির পার্শ্ববর্তী সাফলাডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মাতা-পিতার নাম অন্নপূর্ণা বৈরাগী ও যশোমন্ত বৈরাগী। তার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা সেভাবে হয়নি, কিন্তু প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন। বৈষ্ণব বাড়িতে জন্ম হওয়ার কারণে শাস্ত্র আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাস্ত্রের সম্পর্কে সমক্যজ্ঞান লাভ করেন এবং অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে প্রচলিত সাধন পদ্ধতির বাইরে গিয়ে মতুয়াবাদ প্রচার করেন।
তাঁর প্রচারিত মতুয়া ধর্মে কোনো দেব-দেবীর স্থান নেই। ভক্ত ও অনুসারীদের উদ্দেশ্যে তিনি একটি বাণী প্রচার করেছিলেন ‘মুখে হরি নাম কৃষ্ণ নাম হাতে কাম’। হরিবোল কথাটির অর্থ এখানে শ্রী হরী বিষ্ণু বলা হয়েছে। হরিচাঁদ কখনো নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার কথা বলেননি।
তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া নিম্নশ্রেণির দলিত মানুষের উন্নয়নে স্কুল,কলেজ প্রতিষ্ঠাসহ সমাজ সংস্কারে
নানান কাজ করেছিলেন যার ফলে ভক্ত হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন।