সংবিধানে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ রাখার পক্ষে যে যুক্তি দিলেন আলী রিয়াজ

জাতীয়

বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখার পক্ষ সমর্থন করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রিয়াজ। সম্প্রতি জাপানভিত্তিক সাময়িকী দ্য ডিপ্লোম্যাটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।

সাক্ষাৎকারে আলী রিয়াজ বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা শুধুমাত্র ধর্মীয় বৈচিত্র্যের সহনশীলতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, তবে তাদের কমিশন বহুত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গির সুপারিশ করেছে, যা আরও বিস্তৃত এবং বিস্তারিত।

তিনি আরও বলেন, ১৯৮৮ সালে সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পরও আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি একাধিকবার ক্ষমতায় এসেছিল এবং সংবিধানে ৮ বার সংশোধন করেছে, কিন্তু কখনোই ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বাতিল করার উদ্যোগ নেয়নি। ২০২৪ সালের এপ্রিলে হাইকোর্টের রায়ে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে সংবিধানে বহাল রাখাকে সংবিধানিক স্ববিরোধী নয় বলে ঘোষণা করা হয়।

আলী রিয়াজ জানান, কমিশন বিভিন্ন পক্ষের মতামত শোনার পর ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে রাখার পক্ষেই অনেক বেশি সমর্থন পেয়েছে। তারা ৫০ হাজারেরও বেশি মতামত গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে বিপুল সংখ্যক মত ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে বহাল রাখার পক্ষে ছিল।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সংবিধান পর্যালোচনা করে কমিশন দেখতে পায় যে, ১৯টি দেশে রাষ্ট্রধর্ম আছে এবং ৭৫টি দেশের সংবিধানে “পরমেশ্বরের প্রতি বিশ্বাস” উল্লেখ রয়েছে। এমনকি অনেক পশ্চিমা দেশেও রাষ্ট্রধর্ম বা একক ধর্মের সরকারি স্বীকৃতি রয়েছে।

আলী রিয়াজ আরো বলেন, রাষ্ট্রধর্ম থাকলেও রাষ্ট্র এবং ধর্মের সম্পর্ক আলাদা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি যুক্তরাজ্য এবং ইরানের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে রাষ্ট্রধর্ম থাকলেও ধর্মের ভূমিকা ভিন্ন।

তিনি বললেন, রাষ্ট্রধর্মের প্রভাব অনেক সময় শুধু প্রতীকী থাকে এবং এটি আইনগত বা রাজনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত না হলে উদ্বেগের কারণ নয়

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *