সংসদে উত্থাপিত অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার বিল প্রত্যাহার ও ২০ রমজানের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস প্রদানের দাবিতে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। (৯ এপ্রিল) রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সিলেট জেলা শাখার আহ্বায়ক আবু জাফর এর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক প্রণব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য ও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর বেলাল আহমদ, মিন্টু যাদব, জাহেদ আহমদ, শফিকুল ইসলাম কাজল, নুরুল ইসলাম, আকবর আলী, রাজু আহমেদ প্রমূখ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সংসদে ধর্মঘট নিষিদ্ধের বিল শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের ফলে অর্জিত গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়ার পদক্ষেপ। মহান মে দিবসের প্রাক্কালে এই বিল উত্থাপন মে দিবসের সংগ্রামী ইতিহাসকে অস্বীকার করার সামিল। ধর্মঘটের অধিকার একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপের দেশে দেশেও সড়ক, রেল, বিমান ধর্মঘট হয়েছে। সংবিধান, আইন, আইএলও কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক বিধিবিধান সবখানেই শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকারের স্বীকৃতি আছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিক তার ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য আন্দোলন করতে বাধ্য হয়। আলাপ আলোচনার সমস্ত দরজা বন্ধ হলেই কেবলমাত্র ধর্মঘট আহবান করে থাকে। প্রতিবাদের এই সর্বশেষ অধিকার কেড়ে নেয়ার অর্থ হলো শ্রমিকদের উপর বিনা বাধায় নিপীড়নের অধিকার সম্প্রসারিত হওয়া।
নেতৃবৃন্দ অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতের কথা উল্লে করে জানতে চান, শ্রমিকরা কাজ করে এমন কোন খাতটি অত্যাবশ্যকীয় নয়? এমন কোন খাত নেই যা অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতে অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচিত হবে না। ফলে ভবিষ্যতে এই আইনের দোহাই দিয়ে শ্রমিকদের ন্যায় সঙ্গত দাবী আদায়ের আন্দোলন এবং সংবিধান ও শ্রম আইন স্বীকৃত অধিকার কেড়ে নেয়া হবে। এই বিল আইনে পরিণত হলে তা মালিকদের সুরক্ষা এবং শ্রমিকদের ভীতি প্রদর্শন ও শাস্তি প্রদানের হাতিয়ারে পরিণত হবে।
বক্তারা বলেন, জরুরী সেবা যেমন গুরুত্বপূর্ণ শ্রমিকের অধিকারও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ। ন্যায্য মজুরী, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করার জন্য এখনও শ্রমিকদের আন্দোলন করতে হয়। শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার আগে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন নিষিদ্ধ করা দরকার। এই বিল আইনে পরিণত হলে তা শুধু ট্রেড ইউনিয়ন অধিকারকে সংকুচিত করবে তাই নয়, শ্রমিকদের আইনসংগত আন্দোলনের পথ রুদ্ধ করবে। দেশি এবং বিদেশী মালিকদের পুঁজিকে নিরাপদ ও শোষণকে তীব্রতর করার লক্ষ্যে এই বিল উত্থাপন করা হয়েছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এই বিল প্রত্যাহারের দাবী জানান।
সমাবেশে বক্তারা, ২০ রমজানের মধ্যে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস ও দ্রæততম সময়ের মধ্যে প্রকৃত মালিক শ্রমিকদের ব্যাটারি চালিত যানবাহনের লাইসেন্স প্রদানের আহ্বান জানান।
শেয়ার করুন