‘সন্ত্রাস মুক্ত’ কুলাউড়া গড়তে চান : নাদেল

মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজার-দুই। কুলাউড়া একটি উপজেলা নিয়েই এ আসন। এ সংসদীয় আসনে আ’লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। নির্বাচনী এলাকায় হেভিওয়েট এ প্রার্থী কেন্দ্রীয় আ’লীগের টানা দুইবারের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাই সাধারণ ভোটারদের আগ্রহের শেষ নেই এ প্রার্থীকে ঘিরে। গণমাধ্যমের চোখেও নানা কারণে আলোচিত এই আসন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ’লীগের প্রার্থী নাদেল ছাড়াও ৭জন প্রার্থী রয়েছেন ভোটের মাঠে। তবে সব প্রার্থীকে ছাড়িয়ে শফিউল আলম নাদেলকে ঘিরে সৃষ্টি হচ্ছে নানা কৌতূহল। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ভোটের মাঠে আসাতে নজর কাটছেন রাজনীতিবিদদেরও। ভোটার কিংবা ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে ‘নাদেল ভালো মানুষ’ হিসেবে খ্যাতি পেলেও খোদ প্রার্থী ভাবছেন ভিন্ন কিছু নিয়ে। চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন কুলাউড়াকে সন্ত্রাস মুক্ত করার। এতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে ভোটের মাঠে। তিনি আরও বলছেন, কুলাউড়ার মানুষ আর উন্নয়ন বঞ্চিত হতে চায়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার গত টানা তিন বার ক্ষমতায় থেকে যে উন্নয়নের রোল মডেল, সেই ১৫ বছর আওয়ামী লীগের কোন সংসদ সদস্য না থাকায় কাঙ্ক্ষিত কোন  উন্নয়ন হয়নি, তাই কুলাউড়ার মানুষ আর  উন্নয়ন বঞ্চিত হতে চায়।
গেলো কিছুদিন মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) সংসদীয় আসনের নির্বাচনী পথসভা ঘুরে জানা গেল নানা তথ্য। নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল অন্যান্য প্রার্থীদের মতো প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি না ঝরিয়ে ভোটারদের মন আকৃষ্ট করছেন ‘সন্ত্রাস মুক্ত কুলাউড়া গঠন’ করবেন এমন চ্যালেঞ্জ দিয়ে। নৌকার এ প্রার্থীর বক্তব্য বেশ সাড়া ফেলেছে ভোটের মাঠের রাজধানী চায়ের দোকানে। নানা শ্রেণী পেশার মানুষের মনে দাগ কাটছে এমন বক্তব্য। শুধু চায়ের দোকানেই নয়, নাদেলের এসব বক্তব্য প্রশংসা কুড়াচ্ছে রাজনৈতিক মাঠেও।
তথ্য বলছে, শুধু নৌকার প্রার্থীই নয়, একই সুরে বক্তব্য রাখছেন কুলাউড়া উপজেলা আ’লীগের দায়িত্বশীল নেতারাও। পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে দিচ্ছেন সরকারের নানামুখী উন্নয়নের মেসেজ। উপজেলা আ’লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু, সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদও নির্বাচনী পথসভায় বক্তব্য রাখছেন একই ইস্যুতে।
নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের মতে ‘কুলাউড়ায় দীর্ঘ দিন থেকে একটি গুষ্টি পেশি শক্তি দেখিয়ে নিরীহ সাধারণ মানুষের অনিষ্ট করছে। বিচারের নামে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে। খেটে খাওয়া শ্রমিকদের পকেটে হাত দিয়ে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে।’ এই সমস্ত ঘটনাকে উল্লেখ করে আ’লীগের এ প্রার্থী কঠোর হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন কুলাউড়ায় আর এসব খেলা খেলতে দেওয়া হবেনা। কয়েক শতাধিক গুণ্ডা বা সন্ত্রাসীদের চেয়েও শক্তিশালী সাধারণ মানুষের ভোটের ক্ষমতা বেশি উল্লেখ করে প্রার্থী বলেন- নৌকা প্রতীকে জয়লাভ করে আপনাদের সাথে নিয়ে আমার ইচ্ছে এই কুলাউড়াকে একটি সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে সকলের সহযোগীতা চান।
মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত কুলাউড়া গঠনে গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য রাখছেন উপজেলা আ’লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেনু। এক পথসভায় তিনি বলেন-‘একটি গুষ্টি সন্ত্রাসী কায়দায় মানুষের জায়গা দখল, টাকা আত্মসাৎ, শহরের চাঁদাবাজি করে ঘুরে বেড়ায়। সন্ত্রাসী লালন-পালনই যার নেশা, পেশা তারাই আপনাদের ভুল পথে পরিচালিত করতে চায়। দ্বাদশ নির্বাচনে উন্নয়নের প্রতীক নৌকা থেকে বিতাড়িত করতে চায়। এদের থেকে সাবধান, আগামী ৭ তারিখ নৌকায় ভোট দিয়ে কুলাউড়াকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে সহায়তা করবেন।’
কুলাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সিপার উদ্দিন আহমদ সন্ত্রাস বিরোধী বক্তব্য রাখছেন নানা পথসভায়। আ’লীগের এ নেতা একটি পথসভায় ভোটারদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে বলেন – ‘কুলাউড়ায় যারা চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীদের লালন করে তাদের হাত থেকে কুলাউড়াকে রক্ষা করার এখনোই সময়। আগামী ৭ জানুয়ারি নৌকায় ভোট দিয়ে কুলাউড়াকে সন্ত্রাস মুক্ত করতে সাধারণ ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছেন কুলাউড়া পৌরসভার এ মেয়র।’
রাজনীতিবিদরা যেভাবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে সক্ষম হচ্ছেন তা সত্যিই বিস্ময়কর বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
মৌলভীবাজার-২ আসনে আ’লীগের প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ মোট ৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এম শাহীন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মতিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করা এ কে এম সফি আহমদ, জাতীয় পার্টির মো. আবদুল মালিক, ইসলামী ঐক্যজোটের আসলাম হোসাইন রহমানী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মো. কামরুজ্জামান, ইসলামী ঐক্যফ্রন্টের আবদুল মোত্তাকীন তামিম ও এনামুল হক মাহতাব এবং জাসদের প্রার্থী বদরুল হোসেন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭২ জন।
শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *