সবার জন্য আল্লাহর বিশেষ নিরাপত্তা

ইসলাম ও জীবন

আল্লাহ বলেন, ‘আপনি বলুন, রহমান থেকে রাত ও দিবসে কে তোমাদের রক্ষা করবে? তবু তারা তাদের প্রতিপালকের স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। ’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত : ৪২)

তাফসির : আগের আয়াতগুলোতে পরকালের শাস্তি থেকে কাফিরদের রক্ষা না পাওয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে রাত ও দিনে মানুষের ওপর আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কাফিররা হাসি-ঠাট্টা করলেও মহান আল্লাহ তাদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন।

মহান আল্লাহ তাদের প্রশ্ন করেন যে রাতে ঘুমের সময় এবং দিনে কাজকর্মের সময় সব ধরনের অনিষ্টতা থেকে তোমাদের কে রক্ষা করে? মূলত সৃষ্টিজগতের সব কিছু মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত। মানুষের প্রতি তাঁর অপার অনুগ্রহ রয়েছে। এ কারণে আয়াতে আল্লাহর গুণবাচক নাম ‘রহমান’ তথা করুণাময় উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা কি দেখো না, আল্লাহ আকাশমণ্ডলী ও ভূপৃষ্ঠের সব কিছু তোমাদের জন্য নিয়োজিত করেছেন এবং প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে তোমাদের জন্য তাঁর অনুগ্রহগুলো পরিপূর্ণ করেছেন? মানুষের মধ্যে অনেকে অজ্ঞতাবশত আল্লাহ সম্পর্কে বিতণ্ডা করে, তাদের না আছে পথনির্দেশক, আর না আছে আলোকিত কিতাব। ’ (সুরা লুকমান, আয়াত : ২০)
আয়াতে রাত ও দিবসের উল্লেখের পেছনে বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কারণ দিনের বেলা মানুষ কাজকর্মে ব্যস্ত সময় থাকে এবং নিজের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে রাতে বাড়ি গিয়ে ঘুমায়। মূলত রাত ও দিন মিলেই মানুষের জীবন। তাই এ সময় নিরাপত্তা ও কর্মচঞ্চলতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই তাঁর দয়ায় তোমাদের জন্য রাত ও দিন করেছেন, যেন তোমরা তাতে বিশ্রাম নিতে পার, তাঁর অনুগ্রহ সন্ধান করতে পার এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার। ’ (সুরা কাসাস, আয়াত : ৭৩)

 

তাই রাসুল (সা.) আল্লাহর নিরাপত্তার জন্য তাঁর সব নির্দেশনা পালন করতে বলেছেন। কারণ আল্লাহর কাছে কল্যাণ লাভ করা ও অন্যের ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত থাকা জীবনের অন্যতম সাফল্য। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন,

একদিন আমি রাসুল (সা.)-এর পেছনে ছিলাম। তিনি আমাকে বললেন, ‘হে বালক, আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দিচ্ছি। তা হলো, তুমি আল্লাহর (নির্দেশকে) সংরক্ষণ করবে। তাহলে তিনিও তোমাকে সংরক্ষণ করবেন। তুমি আল্লাহর (নির্দেশকে) সংরক্ষণ করবে। তাহলে তুমি তাঁকে (তাঁর সাহায্য) তোমার সামনে পাবে। তুমি কিছু চাইলে চাও। সাহায্য চাইলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কোরো। জেনে রাখো, পুরো জাতি তোমার উপকারের জন্য একত্র হলে তারা ততটুকু করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য লিখেছেন। আর পুরো জাতি তোমার ক্ষতির জন্য একত্র হলে তারা ততটুকু করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ লিখেছেন। কারণ কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং পাতা শুকিয়ে গেছে। (অর্থাৎ কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না)। ’ (তিরমিজি, আয়াত : ২৫১৬)

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *