ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার নায়ক ছিলেন তিনি। ২০১২ এবং ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে নায়কোচিত ইনিংস খেলেছিলেন মারলন স্যামুয়েলস। কিন্তু সেই নায়কই এবার ভিলেনের চরিত্রে পরিণত হলেন। আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী কোড লঙ্ঘন করায় নিষিদ্ধ হয়েছেন ৪২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি টি-টেন লিগে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী চারটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন স্যামুয়েলস। যে কারণে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুইবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার। এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আইসিসি।
২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) পক্ষে স্যামুয়েলসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ গঠন করেছিল আইসিসি। ২০১৯ সালে আবুধাবি টি-টেন লিগের ঘটনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল।
সেবার ফ্র্যাঞ্চাইজ লিগটির কর্ণাটক টাস্কার্সের দলে ছিলেন স্যামুয়েলস। যদিও কোনো ম্যাচ খেলা হয়নি তার। বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটারের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে চলতি বছরের ১১ নভেম্বর থেকে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের একাধিক আসরে দূরন্ত রাজশাহী, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে এই ক্রিকেটারের।
জানা যায়, স্যামুয়েলসের বিপক্ষে যে চারটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছিল, দুর্নীতিবিরোধী স্বতন্ত্র ট্রাইব্যুনালে শুনানির পর সবকটিই প্রমাণিত হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে নিজের অধিকার স্যামুয়েলস প্রয়োগ করেছেন বলেও জানায় আইসিসি। উভয় পক্ষের যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে স্যামুয়েলসকে শাস্তি প্রদান করা হয়।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কোডের ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৬ ও ২.৪.৭ নম্বর ধারা ভেঙেছেন স্যামুয়েলস। এর ফলে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত দুর্নীতিবিরোধী শাস্তির মুখে পড়লেন দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী এই উইন্ডিজ তারকা। এর আগে, ২০০৮ সালে প্রায় একই অপরাধে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের অধিকাংশের সিদ্ধান্তে ২.৪.২ ধারা ভঙ্গের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে স্যামুয়েলসকে। এ ধারায় বলা আছে, কোনো রকমের উপহার, অর্থ, আতিথেয়তা বা অন্য সুবিধা নেওয়ার তথ্য স্বীকৃত দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে না জানানোর মাধ্যমে ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা।
বাকি তিনটি ধারায় অবশ্য স্যামুয়েলসকে ট্রাইব্যুনালের সব সদস্যই দোষী মনে করেছেন। ৭৫০ বা এর বেশি ইউএস ডলার পাওয়ার তথ্য গোপন করা, তদন্তে স্বীকৃত কর্মকর্তাকে সহযোগিতায় ব্যর্থতা ও তথ্য গোপন করে স্বীকৃত কর্মকর্তার তদন্ত কার্যক্রম বিলম্বিত করার অভিযোগে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হয়।
দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পাওয়া স্যামুয়েলসের জন্য নতুন নয়। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের ওয়ানডে ম্যাচের তথ্য বাইরে পাচার করতে গিয়ে ভারতীয় পুলিশের টেপে ধরা পড়েন তিনি। যদিও এরপরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুটি বিশ্বকাপ জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন ২০২০ সালে পেশাদার ক্রিকেটকে বিদায় জানানো এই ক্রিকেটার।
শেয়ার করুন