সরকারি দপ্তরে অপচয়, সড়কের বাতি জ্বলে সারাদিন

জাতীয়

বিদ্যুতের ঘাটতি কমাতে দেশজুড়ে লোডশেডিং ও রাত ৮টায় মার্কেট-দোকানপাট বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কিন্তু এসব নির্দেশনা পাত্তা পাচ্ছে না হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জ পৌর এলাকায়।

এ অঞ্চলের সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও সেখানকার সাইনবোর্ডে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবহার হচ্ছে অবিরত। সড়কের বাতিগুলোও জ্বলে থাকে সারাদিন।

গত কয়েকদিন ধরেই এ অব্যবস্থাপনা দেখা যাচ্ছে উপজেলায়। সরকারি সিদ্ধান্ত আসার পর থেকে স্থানীয়দের চোখে এ ধরনের অব্যবস্থাপনা ধরা পড়ছে বেশি। শনিবার সারাদিন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক বাতিগুলো জ্বলতে দেখা যায়। রোববার (২৩ জুলাই) সকালেও বেশ কয়েকটি স্থানের বাতি জ্বলে থাকতে দেখা গেছে।

দিনভর জ্বালিয়ে রাখা হয় উপজেলা মৎস্য, নির্বাচন, সমবায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাতি। আজমিরিগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ের সাইনবোর্ডের বৈদ্যুতিক বাতিও জ্বলে দিনরাত। এর কারণ জানতে চাইলে কোনো কার্যালয়গুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউই কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আজমিরিগঞ্জ বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, দিনভর সরকারি বিভিন্ন কার্যালয়ে বিদ্যুতের অপচয় হয়। কেউ এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। আমার ছোট ব্যবসা দিয়ে পুরো পরিবার চলে। আমার মতো অনেকেই আছেন। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করে দিতে হয়। সরকারি কার্যালয়ে কাজ শেষ হওয়ার পর যে বিদ্যুৎ অপচয় হয়, সেটি বন্ধ করে আমাদের দিলেও ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারতাম।

বিদ্যুতের অপচয়ের ব্যাপারে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা দেবাশীষ দেবের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, লোকজন অফিস পরিষ্কার করার কাজে থাকা অবস্থায় লোডশেডিং শুরু হয়। তখন অসাবধানতাবশত সুইচটি বন্ধ করা হয়নি। এজন্য দিনের বেলা বাতি জ্বলছিল।

কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিনই একই অবস্থা চোখে পড়ছে, বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

সড়কের বাতি জ্বলে থাকার বিষয়ে কথা হলে পৌরসভার সচিব হাফিজুর রহমান বলেন, রাস্তার কয়েকটি বাতি মেরামত করার জন্য সকালে মিস্ত্রি এসেছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার সময় সুইচ বন্ধ করেননি। এজন্য বাতিগুলো জ্বলছিল।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ও পৌর সচিব বিদ্যুৎ অপচয়ের ব্যাপারে যে কারণ জানান, তা নিয়ে জনরোষ রয়েছে। এ ব্যাপারে কথা বলতে আজমিরিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি মুঠোফোন নম্বরে কল দিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি। তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগও সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার নম্বরটিও বন্ধ।

স্থানীয়রা বলছে, দিনের পর দিন সরকারি সংস্থা, কার্যালয়ের লোকেরা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। এ বিষয়গুলোর ব্যবস্থা নিতে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *