সাতান্নে এসে এসএসসি পাস

জাতীয়

চাকরির বাকি আর মাত্র দুই বছর দশ মাস। পুলিশের পোশাকে কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের ৩৭টি বছর। তবে চাকরির শেষ বয়সে এসে এসএসসি পাস করেছেন বগুড়ার ট্রাফিক বিভাগের কন্সটেবল আব্দুস সামাদ।

পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদ এ বছর নাটোর জেলার মহর কয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়েছেন।

রোববার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে পুলিশ সদস্য আব্দুস সামাদের এ সাফল্যর খবরটি জানা যায়।

জানা যায়, আব্দুস সামাদ ১৯৬৮ সালে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার আশরাফপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে ১৯৮৭ সালে অষ্টম শ্রেণি পাসে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদান করেন।

তিনি বগুড়ার শেরপুর, সদর ও নন্দীগ্রাম ডিএসবি, সদর কোর্ট এবং সর্বশেষ বগুড়া ট্রাফিক পুলিশের সদস্য হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।

আব্দুস সামাদ জানান, তার চাকরির বয়স আর মাত্র ২ বছর ১০ মাস আছে। চাকরি শেষে হোমিও চিকিৎসায় যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখেন সামাদ। কিন্তু সেই কোর্সে ভর্তি হতে তার এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট প্রয়োজন৷ ফলে সিদ্ধান্ত নেন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২২ সালে তিনি নাটোর মহর কয়া নতুনপাড়া কারিগরি ইনস্টিটিউটটে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখান থেকেই এ বছর তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন এবং জিপিএ ৪ দশমিক ২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

আব্দুস সামাদ বলেন, পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে অষ্টম শ্রেণি পাস করেই পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করি। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার প্রতি ছোটবেলা থেকেই আমার দুর্বলতা ছিল। অবসরে যাওয়ার পর যেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করে সবার সেবা করতে পারি তাই চাকরির পাশাপাশি নিয়মিত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করতাম।

তিনি বলেন, কিন্তু হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার কোর্সে ভর্তি হতে এসএসসি পাসের সার্টিফিকেট লাগে। তাই ২০২২ সালে সিদ্ধান্ত নিই এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার৷ তারপর নাটোরে একটি টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। সেখান থেকে এ বছর এসএসসি পাস করেছি।

পড়াশোনার কোনো বয়স লাগে না দাবি করে তিনি বলেন, আমি এইচএসসি এবং ডিগ্রি পর্যন্ত পড়ালেখা করব।

এ বিষয়ে বগুড়া পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সুমন বলেন, আমাদের ট্রাফিক বিভাগের সদস্য আব্দুস সামাদ ৫৭ বছর বয়সে এসএসসি পাস করেছেন৷ আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি এই বয়সে এসেও শিক্ষার আলোয় আলোকিত হতে চান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *