সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক। এটি একটি বিষধর সাপ। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে দেখা না গেলেও নতুন করে বেশ কয়েকটি জেলায় এ সাপের আবির্ভাব ঘটেছে। চট্টগ্রামের ভেনম রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, সম্প্রতি দেশের ২৭টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে রাসেলস ভাইপার। সবচেয়ে বেশি ছড়াচ্ছে পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলাগুলোতে। সম্প্রতি ঢাকার কাছে দোহারের চরাঞ্চলেও এ সাপের উপস্থিতি দেখা গেছে।
ভেনম রিসার্চ সেন্টার তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত, ভুটান, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, চীন ও মিয়ানমারেও এই ভয়ঙ্কর বিষধর সাপের উপস্থিতি রয়েছে। এ সাপ সাধারণত ঘাস, ঝোপ, বন, ম্যানগ্রোভ ও ফসলের খেতে বাস করে।
যেভাবে নামকরণ
ব্রিটিশ শাসনামলে ভারতে কাজ করতে এসেছিলেন স্কটিস সার্জন প্যাট্রিক রাসেল। ১৭৯৬ সালে তিনি এই সাপ সম্পর্কে গবেষণা করেন। তাঁর নাম অনুসারে এই সাপের নামকরণ করা হয় ‘রাসেলস ভাইপার’। তবে স্থানীয়ভাবে চন্দ্রবোড়া ও উলুবোড়া নামেও পরিচিতি এই সাপ। বাংলাদেশে প্রায় ১০০ বছর এ সাপের অস্তিত্বের কথা জানা যায়নি। ২০১৩ সালে প্রথম রাজশাহী মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকেরা রাসেলস ভাইপারের কামড় খাওয়া রোগী পান।
বাংলাদেশে এল কীভাবে
২০১৮ সালে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জার্নালে একটি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। ওই গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প সংখ্যক রাসেল ভাইপার সবসময়ই ছিল। কিন্তু বংশবিস্তারের মতো পরিবেশ ও পর্যাপ্ত খাদ্য না থাকায় এই সাপের উপস্থিতি তেমন একটা বোঝা যায়নি।
প্রাণিগবেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে এই সাপের সংখ্যা বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল ফলানো। আগে কৃষিজমিতে বছরে একবার বা দুইবার ফসল ফলানো হতো এবং বাকি সময় পানির অভাব থাকায় জমি পরিত্যক্ত পড়ে থাকত। ৯০–এর দশকে সেচ পদ্ধতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে কৃষকরা বছরে দুই থেকে তিনটি ফসল ফলানো শুরু করেন এবং জমি কম সময় পরিত্যক্ত থাকতে শুরু করে।