এমবিএ পাশ করে চাকুরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন সারওয়ার। কীভাবে শুরু করবেন সেটা ভাবছিলেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন গরু পালন করবেন। বাবার দেওয়া ৩ লাখ টাকায় ৩টি গরু দিয়ে শুরু করেন খামার। গরু পালন নেশায় পরিণত হয় তার। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি কুলাউড়া উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের জাবদা গ্রামের সারওয়ার খান কে ।
উপজেলার জাবদা গ্রামে সারওয়ার গড়ে তুলেছেন খান অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম নামে একটি গরুর খামার। সেখানেই সারওয়ারের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
সারওয়ার খান জানান, ১০ বছর আগে শুরু হয় তার এই গরুর খামার। ২০০৬ সালে এসএসসি ও ২০০৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ ও এমবিএ শেষ করেন।
এই উদ্যোক্তা জানান, ২০১৫ সালে বাড়িতে বসে কিছু একটা করবেন ভাবছিলেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন গরুর খামার গড়বেন। ৩ টি গরু দিয়ে শুরু করেন। বর্তমানে ফার্মটিতে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির ৪০ টি গরু আছে। এর মধ্যে ২৮টি কোরবানি ঈদে বিক্রি করবেন। বাকিগুলো থেকে দুধ সংগ্রহ করেন।বর্তমানে ফার্মটিতে প্রায় ১ কোটি টাকার গরু আছে।
সারওয়ার জানান, এর আগে প্রতিদিন প্রায় ৭০-১০০ লিটার দুধ সংগ্রহ করতেন। এখন একটু কমে গেছে। বর্তমানে ৫০ লিটার দুধ সংগ্রহ করেন। দুধ বিক্রি করে প্রতিমাসে ভাল ও টাকা আয় করেন তিনি। তার এই ফার্মে বর্তমানে ৫ জন কাজ করেন। গরুর খাবার হিসেবে নিজের জমিতে লাগানো নেপিয়ার ঘাস, ভুট্টা, ধানের কুড়া, বিচলি, খইল, ভূষি ব্যবহার করেন। গরু মোটাতাজাকরণের জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করেন না তিনি। তিনি প্রতিদিন ফার্মে এসে সবকিছু দেখাশোনা করেন।
বাবার দেওয়া ৩ লক্ষ টাকার পর ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই ফার্মটি গড়ে তুলেছিলেন।
কুলাউড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জানান, উপজেলার জাবদা গ্রামে একটি গরুর ফার্ম আছে এটি জানেন, তবে ফার্মটি পরিদর্শন করতে পারেননি তিনি। ফার্মের মালিক গরু পালনে যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রাণীসম্পদ অফিসের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
গরুর খাদ্যের দাম ও দুধের বাজার ওঠা-নামার সাথে আয়ও ওঠা-নামা করে থাকে।তিনি আরও জানান, তার খামারের সফলতার পেছনে স্হানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সহযোগিতা রয়েছে।খামার করার পর থেকে আজ পর্যন্ত বড় ধরনের তেমন কোন সমস্যা হয়নি।
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে বেকারত্ব দূর করতে অবলম্বন হতে পারে গরুর খামার। সরকারের সহযোগিতা পাওয়া গেলে এ খাতে ৩০% বেকারত্ব দূর করা সম্ভব।
ফার্মের পাশা পাশি বর্তমানে সিলেট শহরে সারওয়ার খানের আরও ৩ টি ব্যবসা রয়েছে ।
শেয়ার করুন