সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে বিপর্যস্ত উপকূল

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং অতিক্রমের পর বেরিয়ে আসছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। এ ঘুর্ণিঝড় উপকূলে-উপকূলে চালিয়েছে তাণ্ডব। দেশের পাঁচ জেলায় ১০ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এরমধ্যে কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে গাছ চাপা পড়ে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সিত্রাং কক্সবাজারে তাণ্ডব চালিয়েছে বেশ। জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে নিম্নাঞ্চল। বসতঘরে ঢুকেছে পানি। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সকাল হতেই আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। বাড়ি ফিরে সেই পানি অপসারণে ব্যস্ত অনেকে। কেউ কেউ বিধ্বস্ত ঘর-বাড়ি মেরামতের চেষ্টা করছেন। ভেঙেছে অসংখ্য গাছ।
আর ডুবে যাওয়া সেন্টমার্টিনের বিভিন্ন এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে থাকায় অনেকে সাগরে নেমে পড়েছেন।

লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙেছে। প্লাবিত হয়ে আছে বসতবাড়ি-রাস্তাঘাট; ভেঙেছে বাড়িঘর, বহু গাছপালা। উপড়ে পড়েছে খুঁটি, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে গোটা জেলা। পাশাপাশি যানবাহন চলাচলও ব্যাহত।
সাতক্ষীরায়ও আশ্রয় কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরেছেন উপকূলের মানুষ। গোটা রাত তাদের কেটেছে উদ্বেগ-আতঙ্কে। তবে সেখানে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা।

এছাড়া ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ বিভিন্ন উপকূলে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ভেঙেছে অসংখ্য গাছপালা, নেই বিদ্যুৎ। সবমিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ৫ থেকে ৬ ফুট জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। মঙ্গলবার সারাদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। আর ২৬ অক্টোবর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৩ কিলোমিটার।
মূলত, বৃষ্টি ঝরিয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং স্থল নিম্নচাপে পরিণত হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি অতিদ্রুত উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মধ্যরাতে উপকূল অতিক্রম করেছে। মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে ‌‘সিত্রাং’-এর মূল অংশ উপকূল অতিক্রম শুরু করার পূর্বাভাস দিলেও শেষের দিকে এটি গতি অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই আগেভাগেই উপকূল অতিক্রম শুরু করে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, দেশ এখন পুরোপুরি সিত্রাংমুক্ত। ঘূর্ণিঝড়টি নিম্নচাপ থেকে লঘুচাপে পরিণত হয়ে হবিগঞ্জ-সিলেট হয়ে মেঘালয়ের দিকে যাচ্ছে।

এরইমধ্যে কমানো হয়েছে সতর্কসংকেত। সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে, সাতক্ষীরা-খুলনাসহ উপকূলের ১৩ জেলায় ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপদসংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অফিস।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *