সিলেটের কারা আসতে পারেন নতুন মন্ত্রিসভায়?

সিলেট

দেশ স্বাধীন হাওয়ার পর থেকেই সব সরকারের মন্ত্রিসভায় ছিলেন সিলেটের রাজনীতিবিদরা। সব সরকারপ্রধানই পূণ্যভূমি সিলেটকে আলাদা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এমনকি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন সিলেটের রাজনীতিবিদরা।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়ের পর টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের আগ মুর্হুতে সিলেটজুড়ে আলোচনা; কারা আসছেন মন্ত্রিসভায়, সিলেট থেকে কারা কারা শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন?

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। নিরঙ্কুশ এই জয়ের ফলে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি। বুধবার শপথ নেবেন সংসদ সদস্যরা। আর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শপথ নেবে নতুন মন্ত্রিসভা।
বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, এবার মন্ত্রিসভায় সিলেটের ‘ক্লিন ইমেজধারী’ ও অভিজ্ঞ সদস্যরা নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেতে পারেন।

এরমধ্যে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এম এ মান্নান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ও সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ নতুন মন্ত্রিসভায় আবারও পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে স্থান পেতে পারেন। এই তিন মন্ত্রী সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে বেশ সুনাম রয়েছে।
এবার মন্ত্রী সভা থেকে বাদ পড়তে পারেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য শাহাব উদ্দিন। এছাড়া এবার বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। তাই তার মন্ত্রী সভায় বাদ পড়া নিশ্চিত।
অন্যদিকে, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালযয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে স্থান পাওয়ার আলোচনায় রয়েছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তিনি মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তিনি ঢানা দুইবার দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়ও তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও বিসিবির নারী উইংসের চেয়ারম্যান। সিলেটের ক্রীড়াঙ্গনেও তার বেশ অবদান রয়েছে। তিনি সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ থেকে প্রথমবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক। সিভিল সার্ভিসের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে মোহাম্মদ সাদিক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি শিক্ষা সচিব ও নির্বাচন কমিশন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কর্মকমিশনের সদস্য পরে সাংবিধানিক সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন সাদিক। এসময় তিনি পরিক্ষাপদ্ধতির নানা সংস্কারের জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন।

যেভাবে গঠিত হবে নতুন মন্ত্রিসভা
নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গেজেট জারির পর তাদের শপথ পড়ানো হবে। এরপর সংসদ সদস্যরা বৈঠক করে সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচন করবেন। রাষ্ট্রপতি সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীকে শপথ পড়ানো হবে। এরপর নিয়োগপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। শপথের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দপ্তর বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আর এর মধ্য দিয়েই নতুন সরকারের যাত্রা শুরু হবে।
মন্ত্রিসভা গঠন প্রসঙ্গে সংবিধানের ৫৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মন্ত্রিসভায় একজন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, যিনি সংসদ সদস্য, সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থাভাজন বলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রতীয়মান হবেন, রাষ্ট্রপতি তাকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে নির্ধারণ করবেন, সেভাবে অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দিয়ে থাকেন।

 

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *