সিলেটের রাস্তায় রাস্তায় অবৈধ পশুর হাট, নেপথ্যে প্রভাবশালী মহল?

সিলেট

বন্যাকবলিত প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। সিলেট নগরীর বৃহত্তম স্থায়ী পশুর হাট কাজির বাজার ছাড়াও ৬টি অস্থায়ী হাটের ইজারা প্রদান করেছে সিসিক। তবে বৈধ পশুর হাটের চেয়ে নগরীতে অবৈধ পশুর হাট বেশি হয়ে গেছে। নগরীর রাস্তায় রাস্তায় বসানো হয়েছে পশুর হাট ।

অবৈধ পশুর হাট বসানোর নেপথ্যে আওয়ামী লীগ-বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতারা রয়েছেন বলে জানা গেছে। মূলত এসব হাট পরিচালনা করছেন ওইসব নেতাদের বলয়ের বিভিন্ন গ্রুপ-উপগ্রুপের নেতারা। রাস্তায় পশুর হাট না বসানোর সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বৈধ একটিসহ একাধিক পশুর হাট বসে গেছে। রাস্তায় পশুর হাট বসিয়ে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলেও নির্বিকার প্রশাসন। সড়কে বসা পশুর হাট উচ্ছেদ করতে কার্যত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি সিসিক কিংবা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সিসিক মেয়র ও পুলিশ কমিশনার রাস্তায় পশুর বসতে দেবেন না বলে হুংকার দিলেও প্রতিদিন নগরীর কোন না কোন এলাকার রাস্তায় বসছে এসব অবৈধ পশুর হাট।

জানা যায়, এবার সিলেট নগরীতে ৬টি পশুর হাট বসার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। এ ৬টি হাটের ইজারাদার নিয়োগ দেয় সিসিক। এসব হাটগুলো হলো- দক্ষিণ সুরমার কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন খালি জায়গা, চৌকিদেখী পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা, ঝালোপাড়া মসজিদ সংলগ্ন খালি জায়গা, মদিনা মার্কেটস্থ নবাবী মসজিদ সংলগ্ন খালি জায়গা, নতুন টুকের বাজার, মিরাপাড়াস্থ আব্দুল লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালি জায়গা। তবে অনুমোদিত চৌকিদেখী পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা দেখিয়ে যে হাট বসছে সেটি মূলত সড়কে বসেছে। ওই এলাকায় কোনো পয়েন্ট বা খালি জায়গা নেই বলে স্থানীয় কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমার এলাকায় চৌকিদেখি নামের কোনো পয়েন্ট বা খালি জায়গা নেই। কিন্তু পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা দেখিয়ে সড়কে পশুর হাট বসানো হয়েছে।

অনুমোদিত এ হাট ছাড়াও নগরের রাস্তায় রাস্তায় আরও অন্তত ৫-১০ টি অবৈধ পশুর হাট বসেছে। সময় যতো যাচ্ছে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঈদের আগের দিন রাত পর্যন্ত রাস্তায় বসা পশুর হাট ডজন ছড়িয়ে যেতে পারে ।

তথ্যানুসারে নগরের রেলওয়ে এলাকার মারকাজ পয়েন্ট, সিলেট-তামাবিল রোডের বাইপাসের মূল সড়কে, শাহপরাণ বাইপাস সংলগ্ন এলাকায়, মেজরটিলা, নাইওরপুল, পাঠানটুলাসহ একাধিক সড়কে অবৈধ পশুর হাট বসেছে

এ বিষয়ে এমএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সদর ও প্রশাসন) পরিতোষ ঘোষ বলেন, আমরা চেয়েছি রাস্তায় পশুর হাট যাতে না বসে। কিন্তু আমরা ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া তো অভিযান চালাতে পারি না।

চৌকিদেখির সড়কে পশুর হাট বসেছে এমনটা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, চৌকিদেখিতে তো কোনো মাঠ বা পয়েন্ট নাই। তবুও সংশ্লিষ্টরা বাজার অনুমোদন করেছেন। এখন রাস্তায় এসে গেছে হাট। আমরা ম্যাজিস্ট্রেট না পেলে কিভাবে অভিযান চালাই।

অবৈধ পশুর হাটে সিসিক অভিযান পরিচালনা করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, আইনে স্পষ্ট বলা আছে আমরা কোনো বাজারে অভিযান পরিচালনা করতে পারি না। কারা অবৈধ হাট বসিয়েছে তাদের তো সবাই চিনে।

তিনি আরও বলেন, আমরা অবৈধ পশুর হাট উচ্ছেদ করতে পুলিশ কমিশনারকে একাধিক চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কার্যত পদক্ষেপ দেখতে পারিনি।

সিসিক মেয়রের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এমএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ বলেছেন, এটা মিথ্যা কথা। সিটি কর্পোরেশন আমাদের কোথাও চিঠি দেয়নি। মেয়র সাহেব ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে  যেকোনো সময় ডাকলে আমাদের ফোর্স প্রস্তুত আছে

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *