সিলেটের ৬টি সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে গিয়ে ৩৫ প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে ২৪ জনই জামানত হারিয়েছেন। জামানত হারানো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক সাবেক সংসদ সদস্যও।
নির্বাচন কমিশনের বিধি মতে, জামানত রক্ষায় প্রার্থীকে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের একভাগ ভোট পেতে হবে। কিন্তু ২৪ প্রার্থীর কেউই নিজেদের জামানত রক্ষা করতে পারেননি।
সিলেট-১
এ আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা ফয়জুল হক (মিনার) ২ হাজার ১৯৩ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ইউসূফ আহমদ (আম) পেয়েছেন ৯৬৩ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আবদুল বাছিত (ছড়ি) পান ৯০৭ ভোট ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের সোহেল আহমদ চৌধুরী (ডাব) ৪৫০ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের আব্দুল মোমেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আসনটিতে মোট ৬ লাখ ৩৪ হাজার ২১ ভোটের মধ্যে প্রদত্ত ভোট ১ লাখ ২২ হাজার ৩৬৩টি। এর মধ্যে জামানত রক্ষায় আট ভাগের এক ভাগ ভোট প্রয়োজন ১৫ হাজার ২৯৫টি।
সিলেট-২
এ আসনে ৭ প্রার্থীর ৫ জনই জামানত হারিয়েছেন। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য) ১ হাজার ৯২২ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল) পান ৬ হাজার ৮৭৪ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুর রব (সোনালী আঁশ) ৯৪৪ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসাইন (আম) ২৫৩ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির (ডাব) ১৮৫ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
আসনটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী (নৌকা) ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহিবুর রহমান (ট্রাক) পেয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬১ ভোট।
সিলেট-৩
আসনটিতেও ৭ জন প্রার্থীর ৫ জন জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক (লাঙ্গল) ৪ হাজার ২৬৯ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম (মোমবাতি) ৫৬০ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম) ২২০ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. ময়নুল ইসলাম (মিনার) ২০৩ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম (ঈগল) ১৩৩ ভোট। জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ছিল ১৫ হাজার ২৮৭।
এ আসনে আওয়ামী লীগের হওয়া প্রার্থী হাবিবুর রহমান (নৌকা) ৭৯ হাজার ৬৭১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ট্রাক প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল ৩৫ হাজার ৮৩৬ পেয়েছেন। মোট প্রদত্ত ভোট ১লাখ ২২ হাজার ২৯২।
সিলেট-৪
আসনটিতে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ (নৌকা) ২ লাখ ৭ হাজার ৯৭ ভোট পেয়েছেন। এ আসনে জামানত হারানো অপর দুই প্রার্থী তৃণমূল বিএনপির আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ) ৪ হাজার ১১ ভোট ও ইসলামী ঐক্যজোটের নাজিম উদ্দিন কামরান (মিনার) ৩ হাজার ৫২ ভোট পেয়েছেন। জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ছিল ২৭ হাজার ১৪১। এই আসনের মোট প্রদত্ত ভোট ২ লাখ ১৭ হাজার ১৩৩।
সিলেট-৫
এ আসনে সাত প্রার্থীর চারজন জামানত হারিয়েছেন। তারা হলেন তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দিন সিকদার (সোনালী আঁশ) ২ হাজার ২০৭ ভোট, জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ (লাঙ্গল) ১২৪ ভোট ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলম (ডাব) ১৫৯ ভোট। মোট প্রদত্ত ১ লাখ ভোট ৪ হাজার ৪৪১। জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ছিল ১৩ হাজার ৫৫ ভোট।
এ আসনে বিজয়ী আনজুমানে আল ইসলাহ সভাপতি মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী (কেটলি) ৪৭ হাজার ১৫৩ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মাসুক উদ্দিন আহমদ ৩২ হাজার ৯৭৩ ভোট এবং ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ড. আহমদ আল কবীর ২০ হাজার ২৩০ ভোট পেয়েছেন।
সিলেট-৬
এ আসনে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপার্সন শমসের মুবিন চৌধুরী বীরবিক্রম (সোনালী আঁশ) ১০ হাজার ৯৩৬ ভোট, জাতীয় পার্টির মো. সেলিম উদ্দিন (লাঙ্গল) ৫ হাজার ৫৭৯ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আতাউর রহমান (ছড়ি) ১৬৯ ভোট ও ইসলামী ঐক্যজোটের সাদিকুর রহমান (মিনার) ৬২২ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে মোট প্রদত্ত ভোট ১ লাখ ১৬ হাজার ৭০২। জামানত রক্ষায় প্রয়োজন ছিল ১৪ হাজার ৫৮৮।
এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ (নৌকা) ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন (ঈগল) ৩৯ হাজার ৪৮৮ ভোট পেয়েছেন।
শেয়ার করুন