সিলেটে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আরেক মামলা, আসামি ৪৭৭

সিলেট

সিলেটে অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় সাবেক চার মন্ত্রী-এমপি ও মেয়রসহ ৪৭৭জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামীদের সবাই আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন হামলার সাড়ে ৬ মাসের মাথায় আদালতের নির্দেশে সিলেট নগরীর কোতোয়ালি থানায় এ মামলাটি রেকর্ড করা হয়। 

১৯০৮ইং সনের অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনের ৩/৪ তৎসহ ৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৪ দণ্ডবিধির ধারায় ৩ ফেব্রুয়ারি রেকর্ড হওয়া এ মামলার বাদি সিলেট জেলা যুবদলের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও মোগলাবাজার থানার মির্জাপুর গ্রামের মো. নামর আলীর ছেলে সাজিব আহমদ।

সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে (৫৫) প্রধান করে দায়ের হওয়া এ মামলায় ৭৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়।

এজাহারনামীয় অন্য আসামি হলেন সাবেক আইমন্ত্রী আনিসুল হক, সিলেট-৩ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব (৫৫), সিলেট-৫ আসনের সাবেক এমপি হাফিজ আহমদ মজুমদার (৬৫), বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (৬৫), ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. রফিক আহমদ, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য সুভাস দাস (৪৫) ও ইফজাল আহমদ চৌধুরী (৪০), সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ, বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন (৪৯), জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগের সদস্য মির্জান রুবেল (৪০), আওয়ামী লীগ মৃত সুলতান আহমদের ছেলে নেতা ইউসূফ মিয়া (৪৮), জিন্দাবাজার এলাকার হেদায়াত হোসেন খোকন (৪৫), ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রাহেল আহমদ (২৭), জেলা ছাত্রলীগ নেতা তানিম আহমদ (২৪) ও পারভেজ হোসেন (২৫), আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল হান্নান (৪৫) ও রতন চন্দ্র রায় (৩৫), জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক শাহীনুর রহমান (৪০), জেলা ছাত্রলীগ নেতা সিফাত আহমদ (২৫), যুবলীগ ক্যাডার খালেদ আহমদ ওসমানী (৪৪), ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল আহমদ জুয়েল (৪৬), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাদাঘাট এলাকার হাবিব সারোয়ার আজাদ (৫০), আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিন (৫০), শাহপরাণ থানা এলাকার নিপবনের যুবলীগ ক্যাডার মৃত হরমুজ আলীর ছেলে মামুন আহমদ ওরফে ছেছরা মামুন (৩০), মোগলাবাজার এলাকার নিজ জালাপুর গ্রামের ফারুক আহমদ, জালালাবাদ এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল খালিকের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫০), জৈন্তাপুর আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন (৪২), পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহমান, গোলাপগঞ্জের মৃত ময়না মিয়ার ছেলে দুলাল আহমদ (৩৮), জৈন্তাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের গোলাম মোস্তাফার ছেলে সৈয়দ রাজু আহমদ (৩৯), ওসমানীনগর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহমান (৪৫), সিলেট নগরীর লামাপাড়া এলাকার মৃত আবদুস সোবহানের ছেলে টিপু মিয়া (৩৮), জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজা (৪০), যুবলীগ নেতা পাঠানটুলা এলাকার চান মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া (২৮), জৈন্তাপুর উপজেলা যুবলীগ নেতা পুসরত আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (৩৫), রাজনগর উপজেলার উত্তরবাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান ছালিক (৫৫), দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তোয়াজিদুল হক তুহিন, বালাগঞ্জের জমির আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা মো. ফরিদ আহমদ (৩০), ওসমানীনগর উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি সোয়েব আহমদ চৌধুরী (৩৫), ওসমানীনগর উপজেলার মৃত সাইদুর রহমান চৌধুরীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ফাহিম আহমদ চৌধুরী (২৮), সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহরের ফাহাদ আবদুল্লাহ (৩০), জালালাবাদ ক্যান্টমেন্ট এলাকার মৃত আফতাব মিয়ার ছেলে রুবেল আহমদ (৩০), গোলাপগঞ্জের ধরাবহরের নুরুজ্জামান জিলুর ছেলে যুবলীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম রুমেল (২৫), বিয়ানীবাজারের মৃত সুরমান আলীর ছেলে মো. হামিদুল হক (২৫), জাফলংয়ের আবদুল খালেকের ছেলে যুবলীগ নেতা মো. রফিক (৪১), টিলাগড় এলাকার নেছার আলীর ছেলে শিরুল ইসলাম (৩২), বিয়ানীবাজারের গুঙ্গাদিয়া টাওয়ারপাড়ার আপ্তাব উদ্দিনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সাহেদ আহমদ (৩০), শাহপরাণ এলাকার মৃত কাজল খানের ছেলে এনাম খান (৪০), সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ নেত্রী ও নিবপন এলাকার মৃত মুসলিম খানের মেয়ে হামিদা খান লনি (৫০), জগন্নাথপুরের জামালপুরের মানিক মিয়ার ছেলে কাওছার মিয়া (৪৫), বিশ্বনাথের দশপাইকা এলঅকার ইরফান আলীর ছেলে কবির আহমদ উরফে পিস্তল কবির (৪০), বালুচর এলাকার মারুফ আহমদ ডালিম (৩৫), তেতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে বাবর মিয়া (৪৫), এয়ারপোর্ট এলাকার ওলিউর রহমানের ছেলে সালমন আহমদ শুক্কুর (৩৫), সিলেট মহানগর তাঁতী লীগের সহসভাপতি ও নজরুল ইসলামের ছেলে আজহারুল ইসলাম মুমিন (৫০), মোগলবাজার এলাকা মো. গণি মিয়ার ছেলে মো. কয়েছ মেম্বার (৫০), গোয়াইনঘাটের জুবায়ের আহমদের (ঠান্ডা) ছেলে নজরুল ইসলাম (৪২), গোলাপগঞ্জ চন্দরপুর গ্রামের মিছবাহ উদ্দিনের ছেলে শিপু মিয়া (৩৪), সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ নেতা পাঠানটুলা এলাকার এনামূল ইসলাম (৫১), বটেশ্বর এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আহমেদ লিমন উরফে কুটি মিয়া (৩৩), ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজান আহমদ প্রিন্স (৪৫), দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মুন্না আহমদ (৩০), উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. শাহজাহান মিয়া (৫০), যুব মহিলা লীগ নেত্রী গোলাপগঞ্জের নাদিয়া (৩৫), সিলেট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির সহযোগী আনছার মিয়ার ছেলে মো. সাইফুর রহমান (৩০), কানাইঘাটের জাকির আহমদ সাজেদ (২৪), গোয়াইনঘাটের জামাল উদ্দিন সরদারের ছেলে যুবলীগ নেতা মো. শাহরফ (৪৩), আওয়ামী লীগ নেতা ফিরোজ ইফতেখার (৪০), স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা জৈন্তাপুরের মানিক আহমদ (৪০), দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবলীগ নেতা সুহেল আহমদ (৩৫), জগন্নাথপুরে মানিক মিয়ার ছেলে যুবলীগ নেতা কাওছার মিয়া (৪৫), যুবলীগ নেতা সুমন আহমদ (৪০) ও আখালিয়ার বাবু মিয়ার ছেলে রাজন মিয়া (৩৮)।

এজাহারের ভাষ্যমতে, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট বিকেল ৪টার দিকে সিলেট নগরীর চৌহাট্টাস্থ সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এক দফা দাবি ও  ছাত্র-জনতাকে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন চলছিল। এ কর্মসূচিতে বাদীও অংশ নেন। এসময় মামলার অভিযুক্তরা নগরীর রিকাবীবাজার থেকে মিছিল সহকারে এসে চৌহাট্টায় অবস্থানরত বাদীসহ ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। আসামিদের গুলিতে বাদী আহত হন।

এ ঘটনায় বাদী আদালতে চলতি বছরের ৯জানুয়ারি অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক মামলটি রেকর্ড করতে কোতোয়ালি থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *