সিলেটে উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে দুর্ভোগ থাকবে না : সিসিক

সিলেট

একের পর এক সড়ক হচ্ছে প্রশস্ত। রাস্তার উভয় পাশে হচ্ছে নতুন ড্রেন। তারের জঞ্জালমুক্ত হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন সড়ক। দেশের প্রথম ডিজিটাল নগরীর তকমাও লেগেছে সিলেটের গায়ে।

সাম্প্রতিক কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে অনেকে সিলেট নগরীকে লন্ডনের সাথেও তুলনা করছেন। কিন্তু এসব উন্নয়নের গুণকীর্তন ছাপিয়ে এখন নগরবাসীর মুখে অপরিকল্পিত উন্নয়নের ক্ষোভ।

হাজার কোটি টাকা খরচ করেও কেন মিটছে না জলাবদ্ধতার দু:খ, কিংবা উন্নয়নের নামে বছরজুড়ে কেন খুড়োখুড়ি- এমন বহু প্রশ্নে বিদ্ধ হতে হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের। তবে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে দুর্ভোগ অনেক কমে আসবে বলে মনে করেন সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান।

অপরিকল্পিতভাবে সিলেট নগরীর উন্নয়ন হচ্ছে এমন অভিযোগ অনেকে করলেও সুনির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলতে পারছেন না বলে মন্তব্য নূর আজিজের। তিনি বলেন, ‘যখনই কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয় তখন কিছু সিস্টেম ফরো করতে হয়। প্রথমে আমরা প্রকল্প তৈরি করি, তারপর তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাই। সেখানে প্রকল্প যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হয়। এরপরও প্রকল্প চূড়ান্ত ও অর্থবরাদ্দ পর্যন্ত কয়েক ধাপ পেরুতে হয়। অপরিকল্পিতভাবে কোন প্রকল্প নেয়া হলে সেটা পাশই হতো না। অনেকে না বুঝে সমালোচনা করছেন। এটা ঠিক নয়।’

হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের পরও নগরবাসী কেন জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘২০২০ সালে ৩১ কিলোমিটার ড্রেন ও খালের উভয় পাশে ওয়াল  নির্মাণে ২৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে নগরীতে ৪২৭ কিলোমিটার ড্রেন পুনর্নির্মাণ এবং ছড়া-খাল উদ্ধার ও সংস্কারে ৫২৭ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রায় ৭৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু এখনো সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেনেজের কাজ চলছে। তাই বিভিন্ন স্থানে ড্রেনের মুখ বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদাররা ড্রেনের মধ্যে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখেন। যে কারণে অতিবৃষ্টি হলে পানি নামতে সময় বেশি লাগে। ফলে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ড্রেনের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে স্থায়ী মুক্তি পাবেন নগরবাসী।’

রাস্তা প্রশস্ত করার পরও যানজট না কমার কারণ প্রসঙ্গে নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রশস্ত হওয়ায় যানজট কিছুটা কমেছে। তবে রাস্তার কিছু কিছু অংশ মাঝে মধ্যে হকাররা দখল করে রাখেন। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া দিন দিন সড়কে যানবাহনেরও সংখ্যা বাড়ছে। কিছু রাস্তার পাশের ড্রেনের নির্মাণ কাজ চলমান থাকায়ও যানজট হচ্ছে। সবমিলিয়ে এটা বলতে পারি উন্নয়ন কর্মকান্ড সম্পন্ন হলে নগরবাসী এর সুফল পাবেন।’

উন্নয়ন কাজে দীর্ঘসূত্রিতা প্রসঙ্গে নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নির্মাণ সামগ্রীর দাম অনেক বেড়ে গেছে। তাই ঠিকাদাররা কাজের গতি কমিয়ে দিয়েছেন। সময়মতো কাজ শেষ করতে ঠিকাদারদের তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। সুফল পেতে হলে কিছুটা ধৈর্য্য ধরতে হয়। ইতোমধ্যে যেসব উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে তার সুফল ইতোমধ্যে নগরবাসী পেতে শুরু করেছেন।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *