সিলেটে এলাকাভিত্তিক সরবরাহ বন্ধ রেখেও অসহনীয় লোডশেডিং

সিলেট

সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা পরও অসহনীয় লোডশেডিং থেকে রেহাই পাচ্ছেনা সিলেটবাসি।জরুরি মেরামতে জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলেও অসহনীয় লোডশেডিং ফের চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সিলেটবাসী। শহর কিংবা গ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। 

জরুরি মেরামত, সংরক্ষণ কাজ ও লাইনের উপর থাকা গাছের শাখা-প্রশাখা কাটার জন্য বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) থেকে রোববার (২৩ অক্টোবর) পর্যন্ত টানা ৪ দিন সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার শিডিউল দেয় সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)।শিডিউল অনুযায়ী সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ বন্ধ রেখেও মাত্রাতিরিক্ত অসহনীয় লোডশেডিংয়ে সিলেটের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আওতাধীন এলাকায় দৈনিক অন্তত ৩ ঘণ্টা এবং পরবর্তীতে দৈনিক ৭ থেকে ৮ ঘণ্টাও লোডশেডিং হচ্ছে। অথচ শিডিউলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের কথা প্রকাশ করছে পিডিবি।

বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটের কারণে গত জুলাই মাস থেকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সময়সূচি নির্ধারণ করে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তখন সিলেট অঞ্চলেও দিনে দুই-তিন ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। এরপর কয়েকদিন বিদ্যুতের লোডশেডিং কম থাকলেও গত ৪ অক্টোবর জাতীয় গ্রিডে আকস্মিক বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের পর সিলেটে প্রতিদিনই ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সিলেট অঞ্চলের কয়েক লাখ গ্রাহক।

পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির জানিয়েছেন, সিলেটে চাহিদার সাথে সরবরাহের ঘাটতি থাকায় শতকরা ২৫ থেকে ৩০ ভাগ লোডশেডিং হচ্ছে। অথচ, আগে লোডশেডিং হতো মাত্র ২০ ভাগ। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৫৯৩ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে সরবরাহ ছিল ৩৮০ মেগাওয়াট। উদ্ভুত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের চেষ্টা চলছে। গত কয়েকদিনের হিসেবে দেখা যায় সিলেটে বিদ্যুতের লোড কমছে। চলতি মাসে লোডশেডিং বেশি থাকবে। আশাকরি আগামী মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সরবরাহ বন্ধের শিডিউল:
জরুরি মেরামত, সংরক্ষণ কাজ ও লাইনের উপর থাকা গাছের শাখা-প্রশাখা কাটার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে রোবার (২০ থেকে ২৩ অক্টোবর) পর্যন্ত টানা ৪ দিন সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় শিডিউল অনুযায়ী সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ৯ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হবে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বাের্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন বুধবার (১৯ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) মহানগরীর সোনারপাড়া, পূর্বাশা ক্লিনিক, মজুমদারপাড়া, দর্জিপাড়া, পূর্ব মিরাবাজার ও খারপাড়ায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) মহানগরীর বন্দরবাজারস্থ হকার্স মার্কেট, কালীঘাট, মহাজনপট্টি, বটেরতল, মাছিমপুর ও ছড়ারপারে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

শনিবার (২২ অক্টোবর) মহানগরীর বালুচর, শান্তিবাগ আ/এ, আল-ইসলাহ আ/এ, সােনার বাংলা আ/এ,  আলুরতল, গোপালটিলা, আরামবাগ, দলদলি চা বাগান এবং আশপাশ এলাকায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) মহানগরীল রায়নগর, ঝর্নারপাড়, দর্জিবন্দ, খরাদিপাড়া, দপ্তরিপাড়া, মনিরের দোকান, আগপাড়া, বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও আশপাশ এলাকায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *