এবার পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২ টি পশু কোরবানি হয়েছে।এরমধ্যে সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯ পশু কোরবানি হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ জুন) দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সারাদেশে মোট কোরবানির পশুর হাটের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২৪৯টি।
চলতি বছর ৯১ হাজার কোরবানি বেশি হয়েছে
এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি গবাদিপশু কুরবানি হয়েছে। গত বছর সারাদেশে কুরবানিকৃত পশুর সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২ টি। গত বছরের তুলনায় এবার ৯১ হাজার ৪৯টি গবাদিপশু বেশি কুরবানি হয়েছে।
এ বছর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে।
প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৮৪ টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৭টি, রাজশাহী বিভাগে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৪৬৯ টি, খুলনা বিভাগে ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮১টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৩ টি, সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯ টি, রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৭টি এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯০২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।
কোরবানি হওয়া গবাদিপশুর মধ্যে ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ৬০টি গরু, ১ লাখ ৭ হাজার ৮৭৫ টি মহিষ, ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৮টি ছাগল, ৫ লাখ ২ হাজার ৩০৭ টি ভেড়া এবং ১ হাজার ২৪২টি অন্যান্য পশু।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১১ লাখ ৭১ হাজার ২১৭টি গরু, ৬ হাজার ৪৮০টি মহিষ, ১২ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৫টি ছাগল, ১ লাখ ২ হাজার ১৬টি ভেড়া ও অন্যান্য ৮৭৬টি পশু, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ লাখ ২৯ হাজার ৬২টি গরু, ৮৭ হাজার ২১৪টি মহিষ, ৬ লাখ ৪১ হাজার ৯৭৮টি ছাগল, ৯৩ হাজার ১৮১টি ভেড়া ও অন্যান্য ৩৪২টি পশু, রাজশাহী বিভাগে ৭ লাখ ১১ হাজার গরু, ৯ হাজার ৪৬৯টি মহিষ, ১২ লাখ ৩১ হাজার ছাগল ও ১ লাখ ৮১ হাজার ভেড়া, খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৭০ হাজার ২১৯ টি গরু, ১ হাজার ৪৯২টি মহিষ, ৬ লাখ ৫২ হাজার ৭৩১টি ছাগল, ২৫ হাজার ১২৩টি ভেড়া ও অন্যান্য ১৬টি পশু ও বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৩৫টি গরু, ৯৮৯টি মহিষ, ১ লাখ ৫১ হাজার ৫৬৪টি ছাগল ও ১ হাজার ৪৮৫টি ভেড়া কোরবানি হয়েছে।
এছাড়া সিলেট বিভাগে ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৭২টি গরু, ১ হাজার ১৫৩টি মহিষ, ১ লাখ ৭২ হাজার ৭৪টি ছাগল ও ২১ হাজার ৬৪০টি ভেড়া, রংপুর বিভাগে ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৭২০টি গরু, ২৬৯টি মহিষ, ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৩৫৭টি ছাগল ও ৬৫ হাজার ৮৩৩টি ভেড়া এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৩৫টি গরু, ৮০৯টি মহিষ, ১ লাখ ৮৬ হাজার ২৯টি ছাগল ও ১২ হাজার ২৯টি ভেড়া কোরবানি হয়েছে।
এ বছর সারাদেশে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি।
এদিকে শুক্রবার মুসলমানদের অন্যতম বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন উদযাপিত হচ্ছে। সারাদেশে ঈদের দ্বিতীয় দিনেও চলছে পশু কোরবানি।
ইসলামের বিধান অনুযায়ী, ঈদের দিন ছাড়াও আরও দুদিন তথা জিলহজ মাসের ১১ তারিখ (ঈদের দ্বিতীয় দিন) ও ১২ তারিখও (ঈদের তৃতীয় দিন) সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত কোরবানি করার সুযোগ রয়েছে। এই বিধানের আলোকে দ্বিতীয় দিন অনেকে পশু কোরবানি করছেন।
ত্যাগের মহিমা এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য কেউ একাধিক কোরবানি দিচ্ছেন। আবার কেউ পারিবারিক ঐতিহ্য রক্ষায়, কেউ আবার ব্যবসা ও কাজের চাপ এবং কসাইয়ের অভাবে ঈদের দিন পশু জবাই দিতে পারেনি তারাই দ্বিতীয় দিনে কোরবানি দিচ্ছেন।
দ্বিতীয় দিনের কোরবানির সংখ্যাটা পুরান ঢাকায় বেশি হলেও রাজধানীর অন্যান্য এলাকায়ও দেখা গেছে কোরবানির ব্যস্ততা।
শেয়ার করুন