সিলেটে ঘরে ঘরে এখন জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রায় প্রতিটি ঘরেই কেউ না কেউ জ্বর বা সর্দিতে আক্রান্ত । অন্যদিকে দেশে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তবে করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ নেই অধিকাংশ মানুষের। জেলায় বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে।
বিভিন্ন ফার্মেসিতে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েকদিনে জ্বর, সর্দির ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। জ্বর, সর্দিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই নাপা প্যারাসিটামল, হিস্টাসিনসহ বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করছেন। এসব ওষুধ খেয়ে দুই তিন দিনের মধ্যে অনেকের জ্বর ভালো হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে জ্বর, সর্দি থাকলেও আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের প্রাত্যহিক কাজ করে যাচ্ছেন। মেলামেশা করছেন সবার সঙ্গেই।
একটি বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র দত্ত জানান, শরীরে জ্বর নিয়ে অফিসে এসেছেন। তার ধারণা, বন্যার পানি ঘরে উঠেছিলো। পানি নেমে যাওয়ার পর এই জ্বর হয়েছে। তারই অফিসের সমর ব্যানার্জি নামের অপর সহকর্মীরও জ্বর।
সিলেট শহরতলীর মোল্লারগাওয়ের বাসিন্দা আবু বকর। ওষধ নিতে টুকেরবাজারের একটি ফার্মেসিতে এসেছেন। জানালেন তার বাসার সবাই জ্বরে আক্রান্ত। প্রথমে তার নিজের এরপর একে একে স্ত্রী ও দুই সন্তানের জ্বর ওঠে।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ বাড়ায় সরকার নতুন করে মাস্ক পরার নির্দেশনা দিলেও তা রয়ে গেছে কাগজেই। সরকারি—বেসরকারি অফিস আদালত থেকে শুরু করে হাসপাতাল, হাট বাজার কোথাও মাস্কের ব্যবহার নেই। এতে করে দ্রুত করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় জানিয়েছে, রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত বিভাগে মাত্র ১৩৮টি করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০ জনের। এরমধ্যে সিলেটের ৯ জন। আর মৌলভীবাজারের ১ জন। পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। যদিও এ বছরের জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ বাড়ার সময় প্রতিদিন ১ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা হতো।
সিলেটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, পরীক্ষার পাশাপাশি যারা এখনও করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেনি তাদের দ্রুত তা নেওয়া উচিত। কারণে দেশে ফের সংক্রমণ বাড়ছে। এবার বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় বলেন, অনেকেই জ্বর—সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের দ্রুত পরীক্ষা করা উচিত। এতে করে নিজে ও পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ থাকবেন।
শেয়ার করুন