আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে সিলেটে এবার ৭৪টি অস্থায়ী পশুর হাটের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ৬২টি হাটের অনুমোদন হলেও মহানগর এলাকায় ১২টি হাটের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। স্থানীয় সরকার সিলেট জেলা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঈদুল আযহা এলে সরকারী অনুমোদিত হাটের নির্দিষ্ট সংখ্যা থাকলেও অননুমোদিত হাটের ছড়াছড়ি নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে নগর এলাকায় হাট বিড়ম্বনা দেখা দেয় বেশী। ঈদের হাটের শেষদিকে এসে পুরো নগরী অস্থায়ী হাটে পরিণত হয়। এ নিয়ে লেখালেখি হলেও খুব একটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। যেহেতু এখন ক্ষমতায় অন্তর্বর্তীকালিন সরকার তাই এবার অস্থায়ী পশুর হাটের বাইরে হাট বসবেনা বলে জনসাধারণের প্রত্যাশা।
সিলেট জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ঈদুল আযহা উপলক্ষে সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ৬২টি অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন স্ব স্ব এলাকার পশুর হাটের ইজারা কার্যক্রম শেষে পশুর হাট চালু করবেন। মে মাসের শেষ বা জুনের শুরুর দিকে অস্থায়ী হাটের কার্যক্রম চালু হতে পারে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আজ বুধবার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সিটি কর্পোরেশনের আবেদন করা ১২টি অস্থায়ী পশুর হাট এবং উপজেলা পর্যায়ের অস্থায়ী পশুর হাটের স্থান নির্ধারণ করা হবে। একই সাথে এই সভায় ইজারা এবং হাট চালুর সময়কাল নির্ধারণ করে দেয়া হবে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, এবার সিসিকের পক্ষ থেকে নগরীর ১২টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। জায়গা গুলো হচ্ছে- দক্ষিণ সুরমা প্যারাইরচক ট্রাক টার্মিনাল, দক্ষিণ সুরমাস্থ সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন এস ফল্ট মাঠ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউ পার্শ্ববর্তী এলাকা, মাছিমপুর কয়েদীর মাঠ, ঝালোপাড়া ভার্থখলা, শাহপরান গেইট এলাকা, টিলাগড় পয়েন্ট, মেজরটিলা বাজার, তেমুখী, আখালীয়া নবাবী জামে মসজিদ মাঠ সংলগ্ন এলাকা, পাঠানটুলা পয়েন্ট এলাকা ও মিরাপাড়া আব্দুল লতিফ স্কুল সংলগ্ন মাঠ। ইতোমধ্যে সিসিকের পক্ষ থেকে এসব স্থানে হাট চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের অনুমোদন পেলেই সিসিকের পক্ষ থেকে ইজারা কার্যক্রম শেষ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর সিলেট নগর এলাকার ৮টি স্থানে টুকেরবাজার (তেমুখী পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা), মাছিমপুর কয়েদির মাঠের খালি জায়গা, মেজরটিলা বাজার-সংলগ্ন খালি জায়গা, শাহপরান পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা, টিলাগড় পয়েন্ট সংলগ্ন খালি জায়গা, শাহী ঈদগাহস্থ খেলার মাঠের পেছনের অংশ, সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন এস ফল্ট মাঠ ও দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানাধীন ট্রাক টার্মিনালে স্থাপিত কুরবানির অস্থায়ী পশুর হাট চালু হয়েছিল। এবার সিটি কর্পোরেশন আরো ৪টি হাটের তালিকা বৃদ্ধি করেছে।
গত বছর জেলায় ৪২টি অস্থায়ী পশুর হাট চালু হলেও এবার ৬২ টি হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যত্রতত্র অবৈধ পশুর হাট ঠেকাতেই জেলা ও মহানগর এলাকায় অস্থায়ী হাটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, নগর এলাকাগুলো পড়েছে সদর উপজেলায়। নগরে ১২টি হাটের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমার সদর উপজেলায়ও ১০টি পৃথক হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের হাটের সাথে সমন্বয় করে সদর উপজেলার হাটের স্থান নির্ধারণ করা হবে। এ নিয়ে জেল প্রশাসক কার্যালয়ে আজ (মঙ্গলবার) বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
সিলেট জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক সূবর্ণা সরকার দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, ইতোমধ্যে জেলার ৬২ স্থানে অস্থায়ী পশুর হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মহানগর এলাকার ১২ টি পশুরহাটের আবেদনের বিষয় এখনো যাচাই-বাছাই চলছে। এরপর জেলা প্রশাসক অনুমোদন করবেন। এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ তাদের স্ব স্ব উপজেলার হাটের ইজারা ও বেচা-কেনা শুরুর সময় নির্ধারণ করবেন।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান বলেন, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ১২টি স্থানে পশুর হাটের অনুমোদন চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি। অনুমোদনের পর আমরা ইজারা কার্যক্রমের প্রস্তুতি নিবো। অবৈধ হাট ঠেকাতেই এবার বৈধ অস্থায়ী পশুর হাটের সংখ্যা বাড়িয়ে আবেদন করা হয়েছে।
শেয়ার করুন