সিলেটে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক রিকশাচালককে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু তার বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। বিভিন্ন মাধ্যমে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে আম্বরখানা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।
জাকিরুল ইসলাম (৫০) নামের ওই রিকশাচালকের বাড়ি দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানার পুরই মোল্লাবাগে। তার বাবা মৃত তাজুল ইসলাম। জাকির দীর্ঘদিন ধরে নগরীর চৌকিদেখী এলাকায় মানিক মিয়ার কলোনিতে স্ত্রী-সন্তানসহ বসবাস করছেন।
জানতে চাইলে বিমানবন্দর থানার ওসি খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির সিলেটলাইনকে বলেন, ‘ওই রিকশাচালকের বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নাই। তবে তার বিরুদ্ধে আমরা মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পেলে এসএমপির উত্যক্ত করার বিধানের মামলায় তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
এদিকে, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাকির হোসেন যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। তবে রিকশাতে ওঠার পর মেয়েদের সাথে ‘কথাবার্তা বলার’ বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। নিজের মাথায় ‘সমস্যা আছে’ বলেও দাবি করেন তিনি।
ওই রিকশাচালকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনে ফেসবুকে বিভিন্নজনকে পোস্ট দিতে দেখা যাচ্ছে।
একজন লিখেছেন, “২০১৭ সালের একটা ঘটনা, হঠাৎ এখন কেনো উঠে আসলো? হঠাৎ এতো নারী কেনো একজন রিকশাওয়ালার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনছে? অনেকের এই প্রশ্নের উত্তর দিবো।
এই রিকশাচালকের টার্গেট থাকে শুধু মেয়ে। জোর করে এসে ‘আপা যাবেন? আপা যাবেন?’ বলে রিকশাতে উঠান। প্রথমে ধর্মের অনেক কথা বলেন। এরপর শুরু হয় তার প্রশ্ন পর্ব। ‘আপু আপনি কোথায় পড়েন? আপু আপনে কি বিবাহিত?’। যদি অবিবাহিত হয়. এরপর শুরু হয় তার sexual কথাবার্তা। ধর্মের কথা থেকে হঠাৎ এইসব কথাবার্তা শুনে যে কোনো মেয়ে তাৎক্ষণিক ঘাবড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। আর যদি কোনো একা রাস্তা পান তাহলে রিকশা থামিয়ে শরীরে হাত দেয়া শুরু করেন।
এখন প্রশ্ন হলো কেউ অভিযোগ আনলেন না কেন?
কোনো প্রমাণ ছাড়া যদি কোনো মেয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করে, কতজন সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবেন? আর সিলেট শহরে এতো রিকশাচালকের মধ্যে কোনো ছবি ছাড়া, প্রমাণ ছাড়া কাকে গিয়ে ধরবেন? আমি নিজেই যে সময় তার ছবি তুলেছি সে খুব তাড়াতাড়ি চলে গিয়েছেন। ভয়ানক সত্যি কথা হচ্ছে সে এখনো এই কাজগুলো করে যাচ্ছে, এই টাইপ কথাবার্তা, মেয়েদের গায়ে হাত দেয়া, ছেলেমেয়ের কথা বলে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া, টাকা না দিলে বাজে বাজে গালি দেয়া ইত্যাদি।
কেউ প্রমান ছাড়া অভিযোগ আনলে আপনারাই তো বলবেন ‘আপু আপনার মনে হয় হিজাব ছিলো না, ওড়না ঠিক ছিলো না।’ কিন্তু আমাকে যারা নক করেছেন বেশিরভাগ আপু হিজাব করেন। আর হিজাব ওড়না ম্যাটার করে না, ম্যাটার করে সে যেকোনো বয়সের নারী বাদ রাখে নাই।
যাই হোক, এতো এতো মেয়ে মিথ্যা কথা বলবে না,। আমাদের উচিত এই লোকটাকে খুব শীঘ্রই খুঁজে বের করা। এই লোকটাকে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ, এমসি কলেজ, আম্বরখানা, হাউজিং এস্টেট, চৌকিদেখী, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এইসব জায়গায় বেশি পাওয়া যায়। কোনো আপু তার রিকশাতে উঠলে চেষ্টা করবেন তার একটা ছবি তুলতে অথবা ভিডিও ধারণ করার। সময় থাকতে তাকে খুঁজে বের করা উচিত তা না হলে সে আমাদের মা বোনের সাথে আরো বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে।”
আরেক তরুণী লিখেছেন, ২০১৭ সালে তিনি ইন্টারমিডিয়েট ১ম বর্ষে পড়তেন। একদিন ওই রিকশাচালকের রিকশায় ওঠেন তিনি। পরে রিকশাচালক যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা শুরু করলে তিনি গন্তব্যে না গিয়ে মধ্যখানে নেমে পড়েন।
শেয়ার করুন