সিলেটে লুট হওয়া অ স্ত্র-গু লি নিয়ে আতঙ্ক

সিলেট

৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সারাদেশের মতো সিলেটেও সৃষ্টি হয়েছিল চরম অস্থিরতা। সেই সময় সিলেট মহানগর ও জেলার কয়েকটি থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ হাজারের বেশি গুলি এখনো উদ্ধার করা যায়নি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, অনুসন্ধান অব্যাহত আছে, তবে এখনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি নেই। তবে সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্ত্রগুলো সন্ত্রাস বা সহিংস কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। এসব অস্ত্র অপরাধীদের হাতে গেলে সামনের দিনে সিলেটসহ আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলার আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে মত তাদের।

সরকারের পতনের পরপরই সিলেটের বেশ কয়েকটি থানায় সংঘবদ্ধ হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। দুবৃত্তরা লুট করে নিয়ে যায় মূল্যবান নথি, অস্ত্র ও গুলি। পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে সিলেটের বিভিন্ন স্টেশন থেকে লুট হয় ১০১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ হাজার ৭৪০ টি গুলি। লুট হওয়া অস্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে পিস্তল, রাইফেল ও শটগান। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গুলি, টিয়ারশেল, রাবার বুলেট।

লুট হওয়া এসব অস্ত্রের মধ্যে ৮৩টি উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনো রয়েগেছে ১৮টি। এছাড়া এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ৫ হাজার ১৯৯টি গুলি।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন বলেন, ৫ আগস্টের পর পুলিশ মানসিক স্থবিরতায় পাড়েছে। এখনো তাদের রিফর্ম করা যায় নি। আমরা বিভিন্ন গনমাধ্যমে শুনেছি ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি এখনো উদ্ধার করা যায়নি। এতে জনমনে আতঙ্ক কিছুটা হলেও আছে। লুট হওয়া একটি অস্ত্রও বাহিরে থাকা জনগণের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। যারা এই অস্ত্রগুলো লুট করেছে তার সাধারণ জনগন নয়। তাদের অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে।

মানবাধিকার কর্মী লক্ষ্মীকান্ত সিংহ বলেন, এ ধরনের অস্ত্র অপরাধীদের হাতে গেলে ডাকাতি, ছিনতাই, বা রাজনৈতিক সহিংসতার মতো ঘটনা বেড়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো বলছি দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য। সামনে নির্বাচন ঘিরে যদি অস্থিরতা দেখা দেয়, তাহলে এই অস্ত্রগুলো সন্ত্রাস বা সহিংস কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের আশঙ্কা থেকেই যায়।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, এখনো বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া সিলেটের অস্ত্র লুটের ঘটনায় এখনো কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে অস্ত্রে উদ্ধারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রযুক্তিগত সহায়তা ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন থানায় অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলাও করা হয়েছে। অস্ত্রসহ কেউ আটক হলে তাদের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।

এমন পরিস্থিতিতে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। অস্ত্র উদ্ধার এবং দোষীদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *