
সিলেটে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। শুক্রবারও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে জনসংযোগ, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ করেছেন প্রার্থী ও তাদের দলের নেতাকর্মীরা।
গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফীসল ঘোষণা করা হয়। তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি, যা চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
জানা যায়, তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেণ সিলেটের ৬ টি আসনের সকল সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তফসিল ঘোষণার করে প্রচারের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরও প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
নির্বাচনী আচরণবিধিতে রয়েছে- ‘কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বা তৎকর্তৃক মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী বিংবা তাহাদের পক্ষে মনোনীত অন্য কোন ব্যক্তি ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ সময়ের পূর্বে কোনপ্রকার নির্বাচনী প্রচার শুরু করিতে পারিবেন না, এবং ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার পূর্ববর্তী ৪৮ ঘন্টা পূর্বে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করিবেন।’
তবে তফসিল ঘোষণার পরদিনই সিলেটে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালাতে দেখা গেছে প্রার্থীদের। বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা শুক্রবার নির্বাচনী প্রচার চালান।
সিলেট-১ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির শুক্রবার (১২ ডিসেম্বার) সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও জুমআর নামাজ আদায় শেষে গণসংযোগ করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মুক্তাদিরের পক্ষে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এসময় মুক্তাদির বলেন, সিলেট সদর ও মহানগর এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করার মধ্য দিয়ে সেই গণজোয়ারের চূড়ান্ত সফলতা আসবে।
এসময় তিনি আরও বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি সকল ভোট কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। কোন অপশক্তি সাধারণ মানুষের স্বাধীন ভোটাধিকারে যাতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশের মানুষ ভোট ও ভাতের অধিকার অর্জনের জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটিয়েছে। দেশের মানুষ আর কোন পেশী শক্তির কাছে আত্মসমর্পন করবে না।
এরপর শুক্রবার রাতে নগরের ২৭ নং ওয়ার্ডের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে মতবিনিময় করেন খন্দকার মুক্তাদির।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপার্সনের আরেক উপদেষ্টা ও সিলেট-৪ আসনের বিএনপির
প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী শুক্রবার গোয়াইনঘাট উপজেলার ১০নং আলীর গাঁও নিউনিয়ন, কোওর বাজার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে গণসংযোগ ও পথসভা করেন।
আরিফুল হক চৌধুরীর মিডিয়া উইং থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
গণসংযোগে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, এই জনপদগুলো কতটা অবহেলিত, উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত, আমি নিজ চোঁখে না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। যদি বিএনপি সরকার গঠন করে, আপনারা আমাকে বিজয়ী করেন ইনশাআল্লাহ একবছরের মধ্যেই পরিবর্তের দৃশ্য দেখতে পারবেন।
এদিকে, শুক্রবার দুপুরে নগরের দর্শন দেউড়ি এলাকায় সিলেট-১ আসনের প্রার্থী খন্দকার মুক্তাদিরের পক্ষে লিফলেট বিতরণ করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে শনিবার সকালে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কল ধরেননি।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাঈদা পারভীন সিলেটটুডেকে বলেন, এখন কোন ধরণের প্রচার প্রচারণা চালানো যাবে না। ২০ জানুয়ারির আগে প্রচার চালানো অবৈধ। যারাই প্রচার চালাবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হচ্ছে কী না তা দেখভালে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে রয়েছেন। আপনারও কোন তথ্য পেলে জানাবেন।
শেয়ার করুন


