সিলেটে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, অনলাইন বা ইন্টারনেট আমাদের সামনে যেমন অবারিত সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে তেমনি কিছু ঝুঁকিও তৈরি করেছে। বিশেষ করে বাচ্চাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনলাইনে তাদের বিচরণ অভিভাবকদের গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। যাতে তারা এর ইতিবাচক দিকগুলো বেছে নিতে পারে।’
আজ বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) জাগো ফাউন্ডেশন ও টিকটক-এর যৌথ উদ্যোগে সিলেট নগরের দরগা গেইট এলাকায় একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ‘সাবধানে অনলাইন-এ, বিভাগীয় সম্মেলন’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনলাইন ব্যবহারে নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিভিন্ন বিষয় এতে তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় প্যানেল বক্তা ছিলেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট রাবেয়া আক্তার রিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিতমুখ ইনফ্লুয়েন্সার সাকিব বিন রশীদ।
অনুষ্ঠানে সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়গুলোতে আমরা প্রায়ই অনালাইনে যুব-সম্প্রদায়কে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে দেখি। তাই আমি যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্যে আহ্বান রেখে বলতে চাই এই ধরণের ব্যাপারগুলো থেকে নিজেদের বিরত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।’ তিনি গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘ব্যক্তিগত পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে সতর্কতা ও সচেতনতা তৈরিতে অনলাইনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত এ ধরনের আয়োজন আরো করা উচিত।’
অনুষ্ঠানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘ইন্টারনেট বিশেষ করে স্যোশাল মিডিয়ায় যে ক্রটিপূর্ণ, অসত্য বা অনৈতিক কনটেন্টগুলো ছড়িয়ে পড়ছে তা প্রতিহত করতে হবে। আইনের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে এগুলো প্রতিহত করা সম্ভব। কিন্তু সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া এসব ক্ষেত্রে সফলতা আসা সম্ভব নয়।’
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভাইস প্রেসিডেন্ট রাবেয়া আক্তার রিয়া বলেন, ‘ইন্টারনেট আমাদের জন্য বড় আশির্বাদ। বর্তমান সময়ে এমনকি বাচ্চাদের কাছেও ইন্টারনেটের এক্সেস আছে। আমি অভিভাবকদের অনুরোধ করব, বাচ্চাদের ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনলাইনে তাদের বিচরণ অভিভাবকদের গভীরভাবে মনিটরিং করবেন। যাতে তারা শুধুমাত্র এর ইতিবাচক দিকগুলো বেছে নিতে পারে।’
কর্মশালায় প্যানেল বক্তার বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পরিচত ইনফ্লুয়েন্সার সাকিব বিন রশীদ উপস্থিতদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ইন্টারনেট সিকিউরিটির প্রতি নজর রাখার পাশাপাশি আমাদের এমন কন্টেন্ট থেকে দূরে থাকা উচিত যা আমাদের মন মানসিকতা নষ্ট করে। অর্থাৎ আমাদের সকল প্রকার নেতিবাচক কন্টেন্ট থেকে দূরে থাকা উচিত।’ তিনি আরো বলেন, ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যেভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে তাতে কিছুদিন পর সত্য-মিথ্যার ফারাক বোঝা আমাদের জন্য দুরূহ হয়ে পড়বে। তাই ইন্টারনেটের কোনো তথ্য বিশ্বাস করার আগে যাচাই করে নেওয়া খুব জরুরি।’
শেয়ার করুন