সিলেটে হাই ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে রাতভর খেলা, দেখার কেউ নেই!

সিলেট

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে রাত ৮টার পর দোকানপাট ও শপিংমল বন্ধ রাখা এবং সকল ধরনের আলোকসজ্জা পরিহার করার নির্দেশনা দিয়েছিলো সরকার। কিন্তু সরকাররে এসব নির্দেশনা সিলেটে মানছেন না বেশিরভাগ মানুষ। নির্দেশনাটি বাস্তবায়নে প্রশাসনেরও নেই কার্যকরী উদ্যোগ। 

জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন স্থানে হাই ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে ইনডোর গ্রাউন্ডে (মাঠে) রাতভর খেলাধুলা করছেন তরুণ ও যুবকরা। এতে সিলেটে তীব্র লোডশেডিংয়ের চলমান সময়ে বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে বলে সচেতন মহলের বক্তব্য। অথচ এসব বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৯ আড়স্ট) রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীর পাঠানটুলা এলাকার গোয়াবাড়ি, সুবিদবাজার, বনকলাপাড়া, চৌকিদেখী, শাহজালাল উপশহর, শিবগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমার লাউয়াই ও কদমতলি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এসব এলাকায় গড়ে উঠা ইনডোর গ্রাউন্ডে ১০০০ থেকে ১৫০০ ওয়াটের বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে চলছে ফুটবল খেলা। এসব ইনডোর মাঠের একেকটিতে এমন ১৮-২০টি বাতি জ্বালানো রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের। কিন্তু জেলা প্রশাসন এসব ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন।

এদিকে, রাত ৮টার পর মহানগরীর অনেক জায়গায় ও জেলার বেশিরভাগ বাজারে দোকানপাট খোলা থাকছে। পাশপাশি বিয়েবাড়ি, বিভিন্ন মার্কেট ও দোকানে রাতভর আলোকসজ্জা দেখা যায়। যদিও জেলা প্রশাসন বলছে- সরকারের এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করা হচ্ছে। মহানগরীতে  প্রতিদিন সন্ধ্যায় একটি টিম তদারকিমূলক অভিযানে নামে। এছাড়া উপজেলা পর্যায়েও এমন অভিযান প্রতিদিন পরিচালিত হয়।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে সিলেটসহ সারা দেশে রাত ৮টার পর দোকান, বিপণিবিতান ও মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পর গত ১৯ জুন এ সিদ্ধান্ত নেয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, যা ২০ জুন থেকে কার্যকর হয়। সরকারি এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকল জেলা প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলেও সিলেট জেলা প্রশাসনে রয়েছে ঢিলেঢালা ভাব। প্রথম দুদিন খানিক তোড়জোড় দেখা গেলেও এখন যেন হাল ছেড়ে দিয়েছে প্রশাসন।

গত কয়েকদিন থেকে দেখা যাচ্ছে- সিলেট মহানগরীর দুই প্রাণকেন্দ্র বন্দর ও জিন্দাবাজার ছাড়া আর বাকি প্রায় সবখানেই রাত ৮টার পরও খোলা থাকে দোকানপাট। অনেকে এক শাটার খোলা রেখে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত চালিয়ে যান ব্যবসা। এছাড়া সিলেট বিয়ে উপলক্ষে মহানগরীতে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে করা হয় আলোকসজ্জা। কিন্তু এ পর্যন্ত প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার সিলেটভিউ-এ ‘সিলেটে রাত ৮টার পরও দোকান খোলা, বিয়েবাড়ি ও বহুতল ভবনে আলোকসজ্জা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশের পর গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা প্রশাসন নগরে অভিযান চালিয়ে ৩টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে।

কিন্তু কঠোর নজরদারি না থাকায় অবস্থা আগের মতোই চলছে। অর্থাৎ বন্দর ও জিন্দাবাজার ছাড়া আর বাকি প্রায় সবখানেই রাত ৮টার পরও খোলা থাকছে দোকানপাট।

এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন স্থানে হাই ভোল্টেজের শত শত বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে ইনডোর গ্রাউন্ডে রাতভর খেলাধুলা করা হচ্ছে। এতে প্রচুর পরিমাণের অপচয় হচ্ছে বিদ্যুতের। এ অবস্থায় সারা দিনে সিলেটে দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের ফলে অন্তত ৮-১০ ঘন্টা থাকতে হয় বিদ্যুহীন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *